আসানসোল: রাত গড়ালেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার পালা। তার এক দিন আগেই রাজ্যে পৌঁছলেন আসানসোল (Asansol) উপনির্বাচনে তৃণমূলের (TMC) প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughan Sinha)। আর পৌঁছেই ‘বহিরাগত’ তকমা নিয়ে বিরোধীদের একহাত নিলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) যদি বারণসী থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে নির্বাচিত হতে পারেন, গুজরাত থেকে বারাণসী গিয়ে তিনি যদি বহিরাগত না হন, তাহলে তিনিও বহিরাগত নন। রাজনীতিতে অন্য রাজ্য থেকে দাঁড়ানোর চল (Outsider Row) বহু দিন ধরেই চলে আসছে বলেও জানান ‘বিহারিবাবু’ ।


আগামী  ১২ এপ্রিল আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচন (WB By Polls 2022)। মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা সোমবার। সেই মতো রবিবার রাজ্যে এলেন সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন। এ দিন সরাসরি অন্ডাল বিমানবন্দরে নামেন তিনি। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।


বিমানবন্দরেই এ দিন শত্রুঘ্নকে ছেঁকে ধরে সংবাদমাধ্যম। বিজেপি-র তরফে তোলা ‘বহিরাগত’ তকমা নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয় তাঁর। জবাবে শত্রুঘ্ন বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারাণসী থেকে লড়েম। উনি কোথাকার মানুষ? উনি বারাণসীর নিজের লোক, নাকি বহিরাগত? বিহার থেকে একসময় ভোটে লড়েছেন জর্জ ফার্নান্ডেজও। সব জায়গাতেই হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে যদি বহিরাগত না হন, আমি কেন হব?”


বিরোধীদের চুপ করাবেন কী করে জানতে চাইলে স্বভাবসিদ্ধ সুরেই শত্রুঘ্ন বলেন, ‘খামোশ’। সাফ জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ পেয়ে বাংলায় এসেছেন তিনি। মমতার নেতৃত্বে আস্থা রয়েছে। আসানসোলের মানুষ, তৃণমূলের নেতা-কর্মী এবং সর্বোপরি মমতার জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি।


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee Updates: 'কাগজে মুড়ে টাকা নেওয়া দেখতে পায় না ইডি', কয়লাকাণ্ডে দিল্লি যাওয়ার আগে মন্তব্য অভিষেকের


আসানসোলের প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলের তরফে শত্রুঘ্নর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তুঙ্গে তরজা। বাম-বিজেপি দুই শিবিরই শত্রুঘ্নকে ‘বহিরাগত’ আখ্যা দেন।  তার পাল্টা জবাব দেন তৃণমূল নেতৃত্বও। তাঁরা জানান, কোনও ইস্যু না পেয়ে, বহিরাগত তত্ত্ব নিয়ে পড়েছে বিজেপি।


২০১৪-র পর ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে আসানসোলে জিতেছিল বিজেপি। সেখানে বাবুল সুপ্রিয় ছিলেন দলের কাণ্ডারী। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর ফুল বদলে বাবুল এখন তৃণমূলে। আসানসোলের সাংসদ পদ থেকে আগেই ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। উপ নির্বাচনে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। তাঁর ছেড়ে দেওয়া আসানসোলেই শত্রুঘ্নকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।


কিন্তু বিজেপি-কংগ্রেস হয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া শত্রুঘ্নকে নিয়ে শুরু হয়েছে বহিরাগত-তরজা। সেখানে বিজেপি-র প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “তৃণমূলের এমন অবস্থা যে, বাইরে থেকে লোক আনতে হল! প্যারাসুটে করে নামলেন। ১২ তারিখ খামোশ বলে পাঠিয়ে দেব। বাবুলের বিশ্বাসঘাতকতার ফল পাবেন শত্রুঘ্ন।”


আসানসোলের সিপিএম (CPM) প্রার্থী পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পোলাওয়ের গন্ধ ভাল লাগে, কিন্তু সাদা ভাতের মতো সারা বছর থাকি। কিছুদিন থাকবেন, আবার চলে যাবেন, আমি এখানে থাকছি।”


পাল্টা জবাবে পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল সভাপতি বিধান উপাধ্যায় বলেন, “বহিরাগত কোনও বিষয় নয়। মানুষ তৃণমূল প্রার্থীকে দেখছেন। বিজেপি কতটা চেনে আসানসোলকে, কতটা করেছে! কাজের জন্য মন থাকা চাই।”