কলকাতা:  এবার কয়লা সঙ্কট নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দীপাবলির আগে কয়লার জোগান ঘিরে যখন সঙ্কট দেখা দিয়েছে গোটা দেশে, সেই সময় সঙ্কট পরিস্থিতি নিয়ে তিনি। মমতার অভিযোগ, কয়লা সরবরাহের কোনও দায় নিচ্ছে না কেন্দ্র। সকলকে বিদেশ থেকে আমদানি করতে বলছে। বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। (Mamata on Coal Crisis)


বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে সরব হন তিনি। বলেন, "আজ গোটা দেশে কয়লা নেই, বিদ্যুৎ নেই। কেন্দ্র বলছে, সব কয়লা আমদানি করো। দীপাবলিতে আলো জ্বলবে কী করে? সব বাইরে থেকে কিনতে গেলে দামও পড়বে বেশি। আমাদের দেশে কয়লা নেই বলতে লজ্জা হচ্ছে। একটা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা হয়েছে, যাতে বাইরে থেকে কয়লা কিনতে বাধ্য হই আমরা।"


কেন্দ্রের তরফে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে কয়লা উৎপাদনে ১২.৮১ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। কোল ইন্ডিয়ায়, উৎপাদন বেড়েছে ১১.৯০ শতাংশ। তার পরেও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে চাহিদার ৬ শতাংশ কয়লা বিদেশ থেকে আমদানি করতে বলেছে কেন্দ্র। আগামী বছর মার্চ পর্যন্ত বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করতে বলা হয়েছে। কয়লার চাহিদা অনুযায়ী জোগান নেই বলেই এমন নির্দেশ বলে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, ইন্দোনেশিয়া থেকে কম দামে কেনা কয়লা, ভারতে বেশি দামে বিক্রি করা নিয়ে অতি সম্প্রতিই অভিযোগে বিদ্ধ হন শিল্পপতি গৌতম আদানি। সেই নিয়েও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ছে কেন্দ্র।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড রেখে গিয়েছিল বামেরা, জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে বললেন মমতা


সেই আবহেই এদিন মুখ খোলেন মমতা। তিনি জানান, বাংলায় চার-পাঁচটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর সরকারের। এর মধ্যে কিছু যৌথ ভাবে এবং কিছু রাজ্য সরকার একার খরচে গড়ে তুলবে বলে জানিয়েছেন। মমতার দাবি, এতে চাকরির সুযোগ তৈরি হবে যেমন, তেমনই কয়লার অভাবও পূরণ করা সম্ভব হবে। 


তবে অন্য রাজ্যের তুলনায় বাংলার পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে জানিয়েছেন মমচা। তিনি জানিয়েছেন, দেউচা-পাঁচামি থেকে কয়লা উত্তোলন করতে আরও বছর দুয়েক সময় লাগবে। চাহিদা মেটাতে তত দিন পর্যন্ত তাঁর সরকার কয়লা জোগাড় করবে। ইতিমধ্যেই বেশ খানিকটা জোগাড় করা রয়েছে। অন্য রাজ্যে সমস্যা দেখা দিলেও তাই পুজোয় বাংলায় বিদ্যুৎ সঙ্কট দেখা দেয়নি। রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগকেও এর কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি। 


কয়লার এই সঙ্কটের জন্য কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা। তাঁর দাবি, দরিদ্র মানুষ একটার জায়গায় দু'টো বিড়ি খেলে, কোথা থেকে টাকা এল জানতে হামলে পড়েন সকলে। কিন্তু রাজা-মহারাজারা সব যে চোখের সামনে বিক্রি করে দিচ্ছেন, প্রতিরক্ষা থেকে কয়লা সবের চুক্তি যে বিদেশে হচ্ছে, তা দেখেও দেখতে পাচ্ছেন না অনেকেই। সেই নিয়ে কেন্দ্রের কাছে কৈফেয়ত চাওয়ার সাহস নেই কারও।