কলকাতা: বিকেল থেকে রাস্তায় রাস্তায় মোতায়েন ছিল পুলিশ। মাস্ক পরতে কার্যত জোর করতে হচ্ছিল। তার ফল মিলল রাত গড়াতেই। বর্ষবরণের দিনই রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণ (Daily COVID Cases) সাড়ে চার হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে গেল। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে ৪ হাজার ৫১২ জন করোনায় (Novel Coronavirus) আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবারে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৩ হাজার ৪৫১।  অর্থাৎ এক দিনে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ল ১ হাজার ৬১।  গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে  ৯ জন করোনা রোগীর।


একই সঙ্গে, শহর কলকাতার পরিস্থিতিতও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯৮ জন। এক দিন আগেই সংখ্যাটা ছিল ১ হাজার ৯৫৪। এ দিন কলকাতায় ২ জন করোনা রোগী মারা গিয়েছেন। সবমিলিয়ে এই নিয়ে রাজ্যে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ১৯ হাজার ৭৭৩।  এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন মোট ১৬ লক্ষ ৪২ হাজার ৯৯৭ জন।


শুক্রবারের তুলনায় শনিবার রাজ্যে করোনা পরীক্ষাও (COVID Test) কম হয়েছে। এক দিন আগে যেখানে ৪০ হাজার ৮১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। এ দিন পরীক্ষা হয়েছে ৩৭ হাজার ৫৪২ জনের নমুনা। যত সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হয় এবং তার মধ্যে যত জনের পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে সংক্রমণের হার বলা হয়। রাজ্যে এই মুহূর্তে করোনা সংক্রমণের হার ১২.০২ শতাংশ। এর পাশাপাশি রাজ্যে সুস্থতার হার এই মুহূর্তে ৯৭.৯৯ শতাংশে রয়েছে। মোট আক্রান্তের মধ্যে ১৬ লক্ষ ৯ হাজার ৯২৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। 


আরও পড়ুন: Duare Sarkar: রাজ্যে বাড়ছে করোনা, বাতিল জেলায় জেলায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচি


সংক্রমণ এবং মৃত্যুর নিরিখে সব জেলার মধ্যে কলকাতাই শীর্ষে। এখনও পর্যন্ত শহরের ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ১৬৫ জন নাগরিক সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৫ হাজার ৩২১ জন। এর পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৭৯ জনের। মারা গিয়েছেন ৫ হাজার ১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় ২ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়াতেও ২ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ১ জন মারা গিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।


উত্তর ২৪ পরগনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন। হাওড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৪ জন। পশ্চিম বর্ধমানে ২৪১ জন, হুগলিতে ১৬৫ জনের শরীরে নতুন করে সংক্রমণ মিলেছে। এতে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ বেড়েছে। করোনার নয়া রূপ ওমিক্রন এমনিতেই অত্যন্ত সংক্রামক। তার প্রকোপ দেখা দিলে, রাজ্যে খুব শীঘ্র করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই সতর্কতা অবলম্বনে বিশেষ জোর দিচ্ছে প্রশাসন। উৎসবের মরসুমে যে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা চোখে পড়়েছে, তা এড়াতে রাজ্যএ নতুন করে বিধিনিষেধ চালুর চিন্তা-ভাবনা চলছে।