সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Municipality Recruitment Scam Case) সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আবেদন প্রত্যাহার। স্পেশাল লিভ পিটিশন প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে চিঠি রাজ্যের আইনজীবীর। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও আবেদন করে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টে আবেদন প্রত্যাহার করে নিল রাজ্য সরকার।


কোন কারণ দেখিয়ে চিঠি প্রত্যাহার ?


মূলত যে কারণ দেখানো হয়েছে, সেখানে খুব স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যেহেতু এই মামলা ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন এবং কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে গত বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি হয়েছে এবং আগামীকাল শুনানির জন্য দিন ধার্য্য করা হয়েছে, তাই এই মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়ে রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী গত বৃহস্পতিবার যখন শুনানি করেন, সেই সময় এই শুনানিপর্বের দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা পর জানা যায়, একই মর্মে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে, পুর নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা বা লিভ পিটিশন সেটা সুপ্রিম কোর্টে পেন্ডিং বা বিচারাধীন রয়েছে। ফলে, একই মর্মে দু'টি মামলা দু'টি আদালতে বিচার্য হতে পারে না। সেই কারণে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, তাহলে এই মামলাটি নিয়ে তিনি আর এগোবেন না বা শুনানি করবেন না। সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পর তিনি যা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তখন সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, তারা সুপ্রিম কোর্টে এই যে মামলা বা স্পেশাল লিভ পিটিশন করেছে, সেটা প্রত্যাহার করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ফলে, সেই কারণে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী মামলার শুনানি পিছিয়ে দেন। তার পরেই দেখা গেল, সরকারের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্পেশাল লিভ পিটিশন প্রত্যাহার করা হল। 


এই মামলার একদম প্রথম পর্বে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের বিরোধিতায় সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সুপ্রিম কোর্ট থেকে সেই মামলা কলকাতা হাইকোর্টে ফেরানো হলেও, গোটা পর্বের মাঝখানে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা চলে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। ফলে, সেখানেও এই রায়কে পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের তরফ থেকে আর্জি জানানো হয়। কিন্তু, রাজ্য সরকারের সেই আর্জি খারিজ হয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় বহাল থাকে। তার পরে এই মর্মে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে সরকারের তরফে আবেদন করা হয়। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান এই যুক্তিতে যে, এই মামলা শিক্ষক ও শিক্ষা সংক্রান্ত নিয়োগের যে দুর্নীতি তার প্রেক্ষিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে, মামলা শোনার এক্তিয়ার তাঁর নেই। ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হয়। সেই অবকাশকালীন বেঞ্চে গত ২২ মে সরকারের তরফে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু, সেখানেও কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ না মেলায়, সরকারের তরফে তারা ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু, সেখানেও জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়। তার পরে সরকার ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।