রুমা পাল ও অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা: দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে শাসকদলের একাধিক নেতা-নেত্রীর। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সেই নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে তোলপাড় রাজ্য় রাজনীতি। এই প্রেক্ষাপটে এনিয়ে মুখ খুললেন রাজ্য়পাল সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। হিংসা এবং দুর্নীতিতে বাংলা জর্জরিত বলেও মন্তব্য় করলেন তিনি। তাঁকে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। (TMC)


উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর, কোথাও দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে রক্তাক্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকরা, কোথাও আবার দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় স্কুলে ঢুকে  শিক্ষকদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে দুর্নীতি এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতিও। তার মধ্যেই ফের রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত দেখা দিল। 


রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য, "হিংসা এবং দুর্নীতিতে জর্জরিত বাংলা। এর শেষ হওয়া দরকার। দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এটা একরকম ক্যান্সার, যা গোটা সমাজের ক্ষতি করছে। এর বিরুদ্ধে একজোটে লড়তে হবে আমার। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বাংলার সমাজ থেকে হিংসা এবং দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হবে।" রাজ্যপালের এই মন্তব্য ভাল ভাবে নেয়নি রাজ্য সরকার। 


আরও পড়ুন: CV Ananda Bose: গাঁধীমূর্তিকে ঘিরে তৃণমূলের পতাকা, ‘দৃশ্য দূষণ’ বলে কটাক্ষ রাজ্যপালের


রাজ্যপালকে জবাব দিতে এগিয়ে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তিনি বলেন, "দুর্নীতি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট। কিছু মানুষ সব জায়গায় দুর্নীতি করেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি শুধুমাত্র বিরোধীদের দিকেই নজর দিচ্ছে। যাঁরা সরকারে আছেন, তাঁদের দুর্নীতি আড়াল করা হচ্ছে। ফলে একের পর এক বড় বড় দুর্নীতি হয়ে চলেছে আজ। নীরব মোদিরা টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা কেন হচ্ছে না? আসলে যাঁরা সরকারে আছেন, তাঁরা পক্ষপাতিত্ব করছেন। অকারণে বিরোধীদের হেনস্থা করা হচ্ছে।"

নরেন্দ্রপুর নিগ্রহকাণ্ডে তদন্তকারী সংস্থা ব্য়র্থ হলে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন বলে ইতিমধ্য়েই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য়পাল। ফলে আইনশৃঙ্খলা ইস্য়ুতে রাজ্য় সরকারের সঙ্গে তাঁর সংঘাতের পারদ ফের চড়বে কিনা, সেই জল্পনা দানা বাধছে বিভিন্ন মহলে। সেই আবহেই রাজ্যের তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যপাল। এর পাল্টা কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধীদের হেনস্থা করতে তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুললেন ফিরহাদ।