কলকাতা: রাজ্য এবং রাজ্যপালের সংঘাতে নয়া মোড়। এবার বন্দিমুক্তি নিয়ে সরাসরি রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বন্দিমুক্তি সংক্রান্ত ফাইল নবান্নে ফেরত পাঠালেন তিনি। কোন বন্দির মুক্তি, কোন যুক্তিতে মুক্তি, তার ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠালেন তিনি। এর ফলে আবারও রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের টানাপোড়েন সামনে চলে এল।  (CV Ananda Bose)


রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে ফাইল পাঠানো হয় রাজভবনে


১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবসের (Independence Day) আগে ৭১ জন বন্দির মুক্তির সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে রাজ্যের জেলে বন্দি ১৬ জন বিদেশি বন্দির মুক্তির প্রস্তাবও রয়েছে। সেই নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে ফাইল পাঠানো হয় রাজভবনে। সেই ফাইলই ফের নবান্নে ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল বোস।


প্রতি বছরই ১৫ অগাস্ট এবং ২৬ জানুয়ারির আগে বন্দিমুক্তির প্রচলন রয়েছে। এবারও ১৫ অগাস্টের আগে রাজ্যের জেলে বন্দি বেশ কয়েকজন বন্দিদের মুক্তির একটি তালিকার ফাইল রাজভবনে পাঠানো হয় রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে। সেই ফাইলই এবার ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল। কোন বন্দিদের মুক্তি  দেওয়া হচ্ছে, কোন যুক্তিতে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে কৈফেয়ত দাবি করলেন তিনি।   


আরও পড়ুন: BJP Leader Death : পঞ্চায়েত ভোটের পর পেয়েছিলেন মণ্ডল সভাপতির দায়িত্ব, কল্যাণীতে ধনেখালির বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যু


বন্দিমুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য রাজ্যের চার বিভাগ নিয়ে একটি কমিটি রয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র, সংশোধন বিভাগ, পুলিশ এবং আইন বিভাগ নিয়ে গঠিত এই কমিটি। বন্দিদের আচার আচরণের রেকর্ড দেখে তাঁদের মুক্তির বিষয়টি সুপারিশ করা হয়। সেই তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র দফতরে। সেখান থেকে রাজভবনে ফাইলটি যায় অনুমোদনের জন্য। 


বন্দিমুক্তির কার্যকারণ নিয়ে চেয়ে পাঠানো হল কৈফেয়তও


কিন্তু এই প্রথম রাজভবন থেকে সেই ফাইল স্বরাষ্ট্র দফতরে ফেরত পাঠানো হল। শুধু ফাইল ফেরত পাঠানোই নয়, বন্দিমুক্তির কার্যকারণ নিয়ে চেয়ে পাঠানো হল কৈফেয়তও। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে সেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠালে, তবেই বন্দিমুক্তির ফাইল সেই করবেন রাজ্যপাল বোস। 


বাংলার দায়িত্ব পেয়ে আসার পর গোড়ার দিকে রাজ্যপাল বোসের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সুসম্পর্কই ছিল। মিষ্টির হাঁড়ি পাঠানো থেকে, বাংলা শিখতে আগ্রহী রাজ্যপালের জন্য প্রতীকী হাতেখড়ির আয়োজনও করে রাজ্য সরকার। সেই দহরম মহরম নিয়ে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্য বিজেপি-র নেতৃত্ব। তার পর থেকে যত সময় এগিয়েছে ক্রমশ বেড়েছে দূরত্ব। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে অশান্তির আবহে সেই ফাটল আরও চওড়া হয়। সম্প্রতি রাজভবনে দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ গ্রহণের কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়। প্রকাশ্যে তা নিয়ে আপত্তি জানান মমতা, রাজ্যে সমান্তরাল সরকার চালানোর প্রচেষ্টা চলছে বলে একাধিক বার অভিযোগ তোলে তাঁর দলও। সেই টানাপোড়েনই এবার আরও একধাপ এগোল।