বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: পড়াশোনা প্রয়োজন। তাই সর্বস্ব দিয়ে ছেলেকে পড়াশোনা করাতে চেয়েছিলেন। জমি-গয়না বিক্রি করে পড়িয়েছেন ছেলেকে। ছেলেও সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন। উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে তৃতীয় হয়েছেন তমলুকের (Tamluk) হ্যামিল্টন হাই স্কুলের ছাত্র চন্দ্রবিন্দু। ভবিষ্য়তে আইআইটিতে গবেষণা করতে চান চন্দ্রবিন্দু। কিন্তু স্বপ্নের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে উচ্চশিক্ষা নিয়ে চিন্তা তমলুকের চন্দ্রবিন্দু।
লড়াইয়ের আর এক নাম যেন চন্দ্রবিন্দু। অর্থাভাব সমস্যা তৈরি করেছে কিন্তু বাধা হয়ে উঠতে পারেনি। একটা ছোট্ট খাবারের দোকানের উপর নির্ভর করেই চলে সংসার। বাবা-মা ফুটপাতের পাশের ওই ছোট্ট চা ও খাবারের দোকান চালান। কখনও কখনও বাবা-মা কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন চন্দ্রবিন্দুও। কখনও কাজ, তার ফাঁকে ফাঁকে চলত পড়াশোনাও। দাঁতে দাঁতে চেপে চলেছে লড়াই। ফলও মিলেছে। ২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিকে (Higher Secondary) মেধাতালিকায় সারা রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন চন্দ্রবিন্দু মাইতি। উচ্চমাধ্যমিকে মোট প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪। বাংলায় পেয়েছেন ৯৭, ইংরেজিতে ৯৯, রসায়নে প্রাপ্ত নম্বর ৯৯. অঙ্কে পেয়েছেন ১০০, পদার্থবিদ্যায় পেয়েছেন ৯১, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে পেয়েছেন ৯৯। সামগ্রিক প্রভিশনাল পার্সেন্টাইল ১০০।
বাবা মায়ের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে ছোট্ট খাওয়ার দোকান সামলে করতো পড়াশোনা।সেই কষ্টই দেখালো সাফল্যের পথ।রাজ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করলো তমলুকের হ্যামিল্টন হাই স্কুলের ছাত্র চন্দ্রবিন্দু মাইতি। ছেলের কৃতিত্বে খুশি তাঁর বাবা ও মা। মা নীলিমা মাইতি জানিয়েছেন গয়না, জমি বিক্রি করে ছেলেকে পড়িয়েছেন। কষ্টের দাম রেখেছে ছেলেও। পরে আইআইটিতে গবেষণা করতে চান চন্দ্রবিন্দু। কিন্তু তাঁর জন্য খরচ অনেক। সেই খরচ কী ভাবে সামাল দেবেন সেটাই এখন ভাবাচ্ছে মাইতি পরিবারকে। এই পরিস্থিতিতে আগামীদিনে কীভাবে পড়াশোনা চালাবেন চন্দ্রবিন্দু, তা নিয়ে ঘোর সংশয়ে ওই ছাত্রও।
লড়াকু পিয়ালি:
আর্থিক অনটনের সঙ্গে লড়াই করে সাফল্যের মুখ দেখেছেন আলিপুরদুয়ারের প্রত্যন্ত গ্রাম ব্রজেরকুঠির মেয়ে পিয়ালি দাসও। গ্রামে বাবা ছোট্ট দোকান চালান। মা আইসিডিএসে সহায়িকার কাজ করেন। আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই পরিবারে। তবু টিনের চাল ফুঁড়ে আকাশে ডানা মেলেছে স্বপ্ন৷ সব প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে যৌথ তৃতীয় হয়েছেন কামাখ্যাগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের পিয়ালি।
আরও পড়ুন: শুধু জামাইয়ের মঙ্গল নয়, জামাইষষ্ঠী ব্রতপালনের পিছনে ছিল শাশুড়িদের আরও এক মনস্কামনা