আবীর ইসলাম, বোলপুর: কমিশনের নজরবন্দি থেকেও ফাঁক গলে ভোট দেখতে বেরনোর নজির রয়েছে তাঁর। পুরভোটে (WB Municipal Elections) একের পর এক জায়গা থেকে যখন হিংসা, অশান্তির খবর উঠে আসছে, এ বারও নিরুত্তাপই থাকতে দেখা গেল বীরভূমের (Birbhum News) তৃণমূল (TMC) সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal)। বরং মোটরসাইকেলে চেপে ফুরফুরে মেজাজেই বোলপুরে ভোট দিলেন তিনি। নির্বাচনী অশান্তির (Municipal Polls Violence) অভিযোগও ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন।
রবিবার সকালে সমর্থকদের নিয়ে বোলপুরে (Bolpur Municipal Polls) ভোট দিতে বেরোন অনুব্রত। রীতিমতো মোটর সাইকেল মিছিল করে বুথে পৌঁছন ভোট দিতে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীরাও। ভোট দিয়ে বেরিয়ে অনুব্রত বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে গোটা রাজ্যে। শান্তি পূর্ণ ভোট হচ্ছে বীরভূমেও। মানুষকে বলব নিজের ভোট নিজে দিন।’’
বিরোধীদের উদ্দেশে আগেও একাধিক বার পাঁচন থেকে নকুলদানা এমনকি সোহাগ আদর-সোহাগের বার্তা দিতে শোনা গিয়েছে অনুব্রতকে। জয় নিশ্চিত ধরে নিয়ে এ দিন বোলপুরের জায়গায় জায়গায় তৃণমূল কর্মীদের নকুলদানা-বাতাসা বিলি করতে দেখা যায়। সে নিয়ে প্রশ্ন করলে অনুব্রত বলেন, ‘‘মানষ উৎসব করছেন।’’
তেব অনুব্রত উৎসব বলে চালালেও, ভোটের আবহে চারিদিকে অশান্তি, হিংসা চলছে বলে অভিযোগ করছে বিরোধীরা। শনিবার রাতে খড়গপুরে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাডি়তে পুলিশও যায়। তিনি পুর এলাকার ভোট নন, তাই সেখানে থাকা চলবে না বলে তাঁকে জানায় পুলিশ।তার পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধেই এলাকায় বহিরাগত ঢোকানোর অভিযোগ তোলেন দিলীপ।
এ দিনও সকাল থেকে যখন দফায় দফায় অশান্তির খবর উঠে আসছে, সেই সময় দিলীপ বলেন, ‘‘গুন্ডা দিয়ে ভোট করাচ্ছে তৃণমূল।’’ সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে অনুব্রত বলেন, ‘‘কোথায় হচ্ছে আমাকে দেখান। ছবি দেখান দেখি!’’
তবে অনুব্রত অভিযোগ মানতে না চাইলেও, এ দিন তাঁর এলাকা থেকেও দফায় দফায় অশান্তির খবর উঠে এসেছে। বোলপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেখানকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দেদার ছাপ্পাভোটের অভিযোগ ওঠে। লাইনে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তিকে একাধিক বার ভোট দিতে দেখা যায়। এমনকি ইভিএম-এ জোড়াফুলের বোতাম টিপে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রভাবিত করতেও দেখা যায় তৃণমূল এজেন্টকে।
এ ছাড়াও, বারাসতে সিপিএম প্রার্থী রত্না ভট্টাচার্যকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে বিজেপি প্রার্থীকে। বহরমপুরে কংগ্রেস এজেন্টকে বুথ থেকে বার করে দেওয়া হয় এবং মেরে এক জনের কান ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। তাতে ভোটের নামে রাজ্যে সন্ত্রাস চলছে বলে মন্তব্য করেন প্রদেস কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী।