কলকাতা: পুরসভা ভোটে  (Municipal Election 2022) তৃণমূল (TMC)  চারে চার।বিধাননগর থেকে চন্দননগর,  শিলিগুড়ি থেকে আসানসোল রাজ্যের চার প্রান্তেই তৃণমূলের বিপুল জয়। ৪ পুরসভার ২২৬টা ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯৮ টাতেই জিতেছে তৃণমূল। অর্থাৎ মোট ওয়ার্ডের প্রায় ৮৮ শতাংশে জিতেছে ঘাসফুল শিবির। চার পুরসভা মিলিয়ে বিজেপি (BJP) জিতেছে ১২টা আসনে। 


বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন,  ‘আমরা আগেই বলে দিয়েছিলাম, ভোট হয়নি। ভোট লুঠ হয়েছে। আর ফলাফলেও দেখা গেল তাই। 


যদিও বিজেপি নেতৃত্বকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন দলের সাময়িক বহিষ্কৃত নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Majumder)। ভোটে বিপর্যয়ের দায়ও নেতাদের নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। 


কলকাতা ঘেঁষা বিধাননগর পুরসভায় ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৯টা ওয়ার্ডেই জিতেছে তৃণমূল। ১ মাত্র ওয়ার্ডে জিতে কার্যত একমাত্র বিরোধী কংগ্রেস। একটায় নির্দল প্রার্থী জিতেছেন। একদা গেরুয়া শিবিরের ভাল ভোটব্যাঙ্ক বলে পরিচিত বিধাননগরে ধুয়েমুছে গেছে বিজেপি।শূন্য বামেদের ঝুলিও। 
উত্তরবঙ্গে বিজেপির গড়ও এবার তৃণমূলের দখলে। ৪৭ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৭টা ওয়ার্ডে জিতেই প্রথমবার শিলিগুড়ি পুরসভার বামেদের। ৫টায় বিজেপি , ৪টেতে বামেরা এবং একটায় কংগ্রেস জিতেছে। 


হেভিওয়েটদের মধ্যে প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এবং বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ পরাজিত।জয়ী গৌতম দেব।


চন্দননগর পুরসভার ৩২টা ওয়ার্ডের মধ্যে ৩১টাতেই ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল।একটায় বামেরা জিতেছে। বিজেপি শূন্য। আসানসোল পুরসভার ১০৬টা ওয়ার্ডের মধ্যে ৯১টা ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ৭টা আসনে বিজেপি, ৩টিতে কংগ্রেস, ২টো আসনে বামেরা এবং ৩টিতে নির্দল প্রার্থীরা জিতেছেন। 
প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বিধাননগর ও চন্দনগরে বিজেপিকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে বামেরা। আসানসোল ও শিলিগুড়িতে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। তবে দুটি স্থানেই দ্বিতীয় স্থানের লড়াইয়ে তাদের খুব কাছাকাছি রয়েছে। ফলে রাজ্যে বিরোধী পরিসর বিজেপির দিক থেকে ঘুরে ফের বামেদের দিকেই আসছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।


চার পুরভোটে বিজেপির বিপর্যয়ের পর দলের রাজ্য নেতৃত্বকে চোখা ভাষায় নিশানা করেছেন সাময়িক বহিষ্কৃত নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেছেন, এই বিপর্যয়ের দায় দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নেওয়া উচিত। তিনি বলেছেন, রাজভবন ও হাইকোর্ট দেখিয়ে পার পাওয়া যাবে না।  নাম না করে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, কে পদত্যাগ করবেন-অসহায় মজুমদার, ট্যুইট মালব্য,ভার্চুয়াল চক্রবর্তী!
এভাবে জয়প্রকাশ নাম না করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, অমিত মালব্য ও  সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে আক্রমণ করেছেন। সেই সঙ্গে দল পরিচালনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে দলের দায়িত্ব দিতে শিলিগুড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল শঙ্কর ঘোষকে। অথচ শিলিগুড়ি পুরসভার ভোটে তিনি নিজের ওয়ার্ডে শুধু হারেনইনি। চতুর্থ স্থানে চলে গিয়েছেন। 
একইসঙ্গে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকেও নাম না করে আক্রমণ করেছেন জয়প্রকাশ। তিনি বলেছেন, গত বিধানসভা এলাকায় নিজের এলাকায় ওই সাংসদ চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন। পুরভোটে তাঁকে বিধাননগরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি বিধাননগরে আসেননি। আসলে ওই সময় তিনি নিজের বাড়ির লোকজনকে তৃণমূলে পাঠিয়ে নিজের জন্য রাস্তা তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন।