কাঁথি: শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিজেপি-তে যাওয়ায় বিধানসভা নির্বাচনে জয়যাত্রা ধাক্কা খায়নি তৃণমূলের। এ বার অধিকারী পরিবারের হাত থেকে কার্যতই পুনর্জীবন পেল জোড়াফুল শিবির। অধিকারী পরিবারের দাপট কাটিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পুরসভা (Contai News) দখল করল তারা (WB Municipal Election Result)। অর্থাৎ অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্য ছাড়াই এ বার কাঁথি পুরসভা নিজের মতো করে পরিচালনা করতে পারবে তৃণমূল। এ দিন কাঁথি পুরসভার অন্তর্গত ১৮টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিজেপি জয় পেয়েছে তিনটি ওয়ার্ডে। একটি ওয়ার্ডে অন্যান্য়রা।  সেখানে তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা অখিল গিরি বলেন, "বিজেপি দু'টিতে জিতবে জেনেই এগিয়েছিলাম আমরা। একটি বেশি পেয়েছে। আমরা বিরোধীশূন্য চাইনি। কিন্তু মানুষ ভোট দিয়েছেন।"


বছরের পর বছর তৃণমূলের দখলেই ছিল কাঁথি পুরসভা। কিন্তু সেখানে আসল ক্ষমতা ভোগ করত অধিকারী পরিবার। তাদের হাত থেকে কাঁথি পুরসভায় পুনর্জীবন পেতে চেষ্টায় খামতি ছিল না তৃণমূলের। আর বুধবার গণনা শুরু হওয়ার পরই কাঁথিতে ধাক্কা খায় বিজেপি এবং জয়ের রাস্তা প্রশস্ত হয়ে যায় বিজেপি-র। কাঁথি উত্তরে তৃণমূলের রিনা দাসের কাছে হেরে যান বিজেপি বিধায়ক সুমিতা সিংহ। তার পরই গণনা যত এগোতে থাকে, ততই তৃণমূলের জয় নিশ্চিত হতে থাকে। শেষ মেশ কাঁথি পুরসভার দখল ওঠে তাদের হাতেই। 


বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু বিজেপি-তে যাওয়ার পর একে একে তাঁর পরিবারে জ্যেষ্ঠ্য-কনিষ্ঠ একে একে সব সদস্যই গেরুয়া শিবিরে ভিড়তে শুরু করেন। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি হারলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বল্প ব্য়বধানে হারিয়ে মুখরক্ষা করেন শুভেন্দু। রাজ্যে বিরোধী দলনেতা হিসেবেও জায়গা পান। কিন্তু শুভেন্দুর রাজনৈতিক কেরিয়ার বহমান থাকলেও, গত এক বছরে তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যরা বাংলার রাজনীতিতে একেবারে পিছনের সারিতে চলে গিয়েছেন। 



আরও পড়ুন: Municipal Election Result 2022 : মুর্শিদাবাদের ৩টি ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল| Bangla News


আর তাতেই এ বারের পুরভোটে আক্ষরিক অর্থেই বেনজির ঘটনা ঘটে  (Purba Medinipur News) কাঁথিতে। ৪৫ বছর পর, এই প্রথম কাঁথির পুরভোটে নাম ছিল না অধিকারী পরিবারের কোনও প্রতিনিধির কাঁথি পুরসভার গত দু’বারের চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীর নাম ঠাঁই পায়নি বিজেপি-র তালিকায়। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগদান করার মাসখানেকের মধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া (BJP) শিবিরে নাম লেখান তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দু (Soumendu Adhikari)। সেই সময় বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক করা হয় সৌমেন্দুকে। কাঁথিতে বিজেপি-র বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যেত সৌমেন্দুকে। অথচ পুরভোটে বিজেপির তালিকায় তাঁর নামের উল্লেখ ছিল না। আর এ দিন ফলাফল প্রকাশের পর চার দশকে এই প্রথম অধিকারীশূন্য হতে চলেছে কাঁথি পুরবোর্ড।