দার্জিলিং, মোহন প্রসাদ শর্মা : রাজ্যের আকাশে এখন শুধু সবুজ আবির। তারই মধ্যে বিরোধী-শিবিরে 'সবে ধন নীলমণি' তাহেরপুর (Taherpur) ও দার্জিলিং পুরসভা (Darjeeling Municipality)। তাহেরপুরে সিপিএম ১৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টিতে জয়লাভ করেছে। সে তো গেল দীর্ঘ সাংগঠনিক ইতিহাসের ফল। কিন্তু, উত্থানেই নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে চমক দিয়েছে হামরো পার্টি। ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে দার্জিলিং পুরসভায়। পাহাড়ের রাজনীতিতে কার্যত নতুন লড়াই শুরু হতে চলেছে অজয় এড়ওয়ার্ডসের নেতৃত্বে। থুড়ি, হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতার নেতৃত্বে।


কিন্তু, কে এই অজয় এডওয়ার্ডস ? যাঁর নেতৃত্বে শুরুতেই পাহাড়ের রাজনীতিতে ছক্কা হাঁকিয়ে ফেলল হামরো পার্টি। তা জানতে গেলে আমাদের একটু পিছনে তাকাতে হবে।


পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে ১৯৮০ সালে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট তৈরি করেন সুভাষ ঘিসিং। পরবর্তীকালে জিএএলএফের প্রেসিডেন্ট হন তাঁর ছেলে মান ঘিসিং। এই মান ঘিসিংয়েরই শৈশবের বন্ধু অজয় এডওয়ার্ডস। পাহাড়ের একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী এবং সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। চালান একটি এনজিও। সেই সূত্রে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে তাঁর সামাজিক কার্যকলাপের পরিধি। গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের দার্জিলি শাখার সভাপতিও ছিলেন অজয়।


মান ঘিসিং জিএনএলএফের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর গত বেশ কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক সক্রিয়তা বাড়ে অজয় এডওয়ার্ডসের। পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের জন্য তাঁকে মান ঘিসিং দিল্লিও পাঠিয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন অজয়। যাতে সমমনোভাবাপন্ন শক্তিকে একছাতার তলায় আনা যায়। যদিও এডওয়ার্ডসের অভিযোগ ছিল, তিনি দিল্লিতে থাকাকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সঙ্গে দেখা করতে গেলেও মান তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। মান অবশ্য এই অভিযোগের কোনও উত্তর দেননি।


এরপরই দার্জিলিং ফিরে নতুন রাজনৈতিক দল খোলার ঘোষণা করে দেন অজয়। সামাজিক কাজকর্মের সর্বোচ্চ পরিধি রাজনীতি, বলে মন্তব্যও করে ছিলেন তিনি। গত বছর অক্টোবর মাসে হামরো পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সেই শুরু পথচলার। এবার পুরভোটে একাধিক মহিলা ও তরুণ মুখকে লড়াইয়ের ময়দানে নামিয়ে বাজিমাতও করলেন। দার্জিলিং পুরসভার ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টিতেই জয়ী হয়েছে হামরো পার্টি । অবশ্য অজয় এডওয়ার্ডস নিজে পরাজিত হয়েছেন। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে হেরে গিয়েছেন তিনি।