কলকাতা: কেন্দ্র সরকার নির্দেশিকা দিয়েছিল, স্মার্ট মিটার চালু করা বাধ্যতামূলক। বুধবার বিধানসভায় বিদ্যুৎমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, জোর করে স্মার্ট মিটার চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা জনবিরোধী। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, এরাজ্যে স্মার্ট মিটার চালু হবে না। রাজ্য সরকার শুধু টাকা চেনে। আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।
স্মার্ট মিটার নিয়ে এবার সরাসরি সংঘাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। এরাজ্যে স্মার্ট মিটার চালু হবে না। বিধানসভায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা জারি করে জানায়, স্মার্ট মিটার চালু করা বাধ্যতামূলক। সেই নির্দেশ মেনে রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজও চালু করা হয়। এর মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ ওঠে। স্মার্ট মিটারে বিদ্যুতের বিল মাত্রাতিরিক্ত বেশি আসছে। এনিয়ে ক্ষোভ দেখা দেয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। স্মার্ট মিটার বাতিলের দাবিতে পথে নামে বিরোধীরাও। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার বিধানসভায় বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, জোর করে স্মার্ট মিটার চাপিয়ে দিচ্ছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এটা জনবিরোধী। তাই মুখ্যমন্ত্রী এটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এদিন বিধানসভায় অরূপ বিশ্বাস জানান, রাজ্যে ৫-৬ হাজার বাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে স্মার্ট মিটার চালু করা হয়েছিল। সেগুলোকে পুরনো ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এরাজ্যে স্মার্ট মিটার চালু হবে না। WBSEDCL, CESC বিদ্যুৎ ব্যবহারের পর ইউনিট দেখে বিল পাঠায়। অন্যদিকে স্মার্ট মিটার হল প্রি পেড ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে আগেই টাকা দিতে হবে। মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, বিহার, মধ্যপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই স্মার্ট মিটার লাগানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। রাজ্যের মন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, "রাজ্য শুধু পয়সা চেনে। তাই কেন্দ্র ভাল কিছু করলেও করতে দেয় না।'' কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, "ইলেকশনের জন্য ফেরত নিয়েছে। ইলেকশনের পরে হয়তো আবার চালু করে দেবে।''
এই স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিনে জেলায় জেলায় বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন স্থানীয়রা। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে পথ অবরোধ করেন এলাকাবাসী। বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে অবরোধ করেন তাঁরা। স্থানীয়রা বলেন, স্মার্ট মিটারে বিদ্যুতের বিল বাড়ছে। স্মার্ট মিটার তুলে ফেরাতে হবে ডিজিটাল মিটার। আগে যে বিলটা দিতাম, এখন তার ডবল বিল আসছে। দু দিন-তিন দিন-চার দিন পরপর এরা বিল পাঠাচ্ছে। এখন বর্তমানে যা আসছে, অতিরিক্ত বিল তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।' অবশেষে মন্ত্রীর আশ্বাসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন রাজ্যবাসী।