কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : টেটে ফেল করেও ৬ বছর ধরে চাকরি ! অবশেষে চাকরি গেল ৯৪ জন অযোগ্য 'শিক্ষকে'র । নিজেদের নিয়োগপত্র নিজেরাই বাতিল করল পর্ষদ । সূত্রের খবর, অযোগ্যদের তালিকা হাইকোর্টে জমা দিয়েছিল সিবিআই।হাইকোর্টের নির্দেশে অবশেষে চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ।


রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে, রাজ্যের বিভিন্ন যে বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদ আছে, তাদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, ২০১৬ সালে নিয়োগপত্র পাওয়া ৯৪ জন শিক্ষক, যাঁরা গত সাত বছর ধরে চাকরি করছিলেন, তাঁদের নিয়োগপত্র বাতিল করতে হবে। সেই নির্দেশ পৌঁছে গেছে DPSC-র চেয়ারম্যানদের কাছে। 


জানা গেছে, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থী এঁরা। ২০১৬ সালে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, কেউ টেট পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। অর্থাৎ, পরীক্ষায় পাস না করেই ছয় বছর ধরে তাঁরা চাকরি করছিলেন। বেতনও পাচ্ছিলেন। এই তথ্য প্রথম আদালতে জমা দেয় সিবিআই, এমনই তথ্য জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ। তথ্য জমা পড়ার পর, তাঁদের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চও সেই নির্দেশ বহাল রাখে। অবশেষে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, এই ৯৪ জন যাঁরা এখন অযোগ্য শিক্ষক, তাঁদের ডেকে এনে শুনানি করা হয়। কিন্তু, নিয়োগপত্র পেলেও তাঁরা টেট পাসের সংশাপত্র পেশ করতে পারেননি। তারপর পর্ষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। পর্ষদ সাত বছর আগে এঁদের নিয়োগপত্র দিয়েছিল (মানিক ভট্টাচার্যের আমলে নিয়োগপত্র, গৌতম পালের আমলে বাতিল)। পর্ষদ আবার তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 


এদিকে ওএমআর কেলেঙ্কারি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে রক্ষাবকচ পেয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল ও ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার। মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে না। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল, শুক্রবার তাঁদের রক্ষাকবচ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। 


এই মামলায়, ১৮ অক্টোবর, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল ও ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকারকে CBI তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পেশ করা রিপোর্ট দেখে বিচারপতি নির্দেশ দেন, প্রয়োজন মনে করলে পর্ষদের কোনও আধিকারিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে CBI। এমনকী, তদন্তে সহযোগিতা না করলে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করলে তাঁদের হেফাজতেও নিতে পারে। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং ডেপুটি সেক্রেটারি।