উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : ফের উত্তপ্ত বিধানসভা। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় সোমবার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। এদিন নানা ইস্যু নিয়ে দফায় দফায় উত্তেজনার পর সাসপেন্ড করা হয় বিধায়ক মনোজ ওঁরাওকে। সতর্ক করা হয় বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে। প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে বিজেপি।

এদিন প্রশ্ন-উত্তর পর্বে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক বিষয়ে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। ১০০ দিনের টাকা কেন কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে সেই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে এই টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। একাধিকবার প্রতিনিধলে এসেও কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। এমনকি এখানকার প্রতিনিধি দল তারা দেখা করতে গিয়েছিলেন। চার ঘন্টা বসিয়ে রেখে তাদের সঙ্গে দেখা করেনি। উল্টে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যখন এই বক্তব্য রাখছিলেন  সে সময় বিজেপির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় একটি মন্তব্য করেন। মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ থামিয়ে শিখা চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, 'আপনি কী করেন সব আমার জানা আছে।'এই কথা বলা মাত্রই প্রথমে উঠে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, কোনও বিধায়ক কোনও প্রশ্ন করলেই মুখ্যমন্ত্রী তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। শুরু হয় বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভ। শংকর ঘোষকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'পুরসভা নির্বাচনে জিততে পারেন না আবার কথা।' শংকর ঘোষ পাল্টা বলেন, 'আপনি কম্পার্টমেন্ট মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দু কাছে হেরেছেন।' এরপরই  স্লোগান এবং পাল্টা স্লোগানে উত্তপ্ত হয় বিধানসভা। তবে কিছুক্ষণ বাদে বিজেপি বিক্ষোভ থামিয়ে নিজেদের আসনে বসে পড়েন। 

এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে একটি মুলতবি প্রস্তাব বিধানসভায় আনা হয়। রাজ্যের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা এবং যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে বিধানসভায় আলোচনার দাবি জানানো হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ সেটি বাতিল করে দিয়ে বলেন যেহেতু বিচারাধীন বিষয় তাই এই নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা করা যাবে না। বিজেপি বিধায়করা আবার বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী সে-সময় বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন। যদিও বিরোধী দলনেতা এদিন বিধানসভায় আসেননি। 

স্লোগান চলার মধ্যে প্রথমে দেখা যায় বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাওকে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ।। বিধানসভায় মার্শালদের টিম তাকে হাউস থেকে বের করে দেন। প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়। এরপর বিজেপি বিধায়করা ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান। অধ্যক্ষ শংকর ঘোষকে সতর্ক করেন। বিধানসভার সিঁড়িতে বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। 

 

বিজেপি বিধায়রদের দাবি, একের পর এক বিধায়কদের সাসপেন্ড করে বিরোধীশূন্য বিধানসভায চালাতে চাইছে সরকার। কেউ কোন প্রশ্ন করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে। তুলসী গাছ সামনে রেখে চলতে থাকে বিজেপির বিক্ষোভ - প্রতিবাদ। সরকার বিরোধী স্লোগান এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান ছিল বিজেপি বিধায়কদের গলায়।