কলকাতা: মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে ভাঙড়ের ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির বৈঠক ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। জল্পনা উস্কে দিয়েছে ক্য়ানিং পূর্বের বিধায়ক এবং ভাঙড়ে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লার মন্তব্য়। এই আবহে বামপন্থীদের একাংশকে ধান্দাপন্থী বলেও কটাক্ষ করেছেন নৌশাদ সিদ্দিকি।
বিধানসভায় বাম-কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থী হয়ে ভোটে জেতার পর, লোকসভা নির্বাচনে কিন্তু বামেদের সঙ্গে ISF-এর জোট হয়নি। শেষমুহূর্তে কার্যত বামেদের সঙ্গ ছেড়ে দেয় ISF। তখনও ISF-এর উদ্দেশ্য় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এদিন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বামপন্থীরা বলছেন নৌশাদের গতিবিধি আমাদের ঠিক পছন্দ হচ্ছে না... ভাঙড়ের ISF বিধায়ক বলেন, "যে বামপন্থী বলছে ওসব বামপন্থীর নামে তারা ধান্দাপন্থী।'' অথচ উপনির্বাচনেও তাদের সঙ্গেই লড়াই করেছে ISF। নৌশাদ বলছেন, "আমি কী বললাম যে ধান্দাপন্থীরা বলছে বামপন্থীর নামে।''
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। ভোটে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ার নজিরও রয়েছে। বছর ঘুরলেই আরেকটা বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে জোটসঙ্গীর একাংশকে ধান্দাপন্থী বলেও কটাক্ষ করলেন ISF বিধায়ক। এপ্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ি বলেন, "উনি ছিলেন আমাদের সঙ্গে গত বিধানসভা নির্বাচনে। উনি আমাদের সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন। জিতেছেন। আবার লোকসভা নির্বাচনে ছিলেন না। নিজেই ঘোষণা করলেন, নিজেই চলে গেলেন। উপনির্বাচনে আবার ছিলেন। এরাজ্যে তৃণমূল, বিজেপিকে ঠেকাতে হলে, তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে যার যার নিজের স্বার্থ ছেড়ে।''
হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল যেদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন, সেদিনই নবান্নে গিয়ে মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির বৈঠক করেন। যা ঘিরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। যা নিয়ে নৌশাদ বলছেন, "আমার সঙ্গে ২০ থেকে ২২ মিনিট করেছেন। আমি যে ব্য়াপারটা নিয়ে গিয়েছিলাম তিনি মনোযোগ সহকারে শুনেছেন। উনি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে শুনেছেন। এবং এটাও আশ্বস্ত করেছেন BUP-এর যে গাইডলাইন আছে সেই গাইডলাইন মতই কাজ হবে। আমি আমাদের রাজ্য়ের অভিভাবিকার কাছে আমার সমস্য়া নিয়ে ভাঙড়ের সমস্য়া নিয়ে দ্বারস্থ হয়েছি।''
কিন্তু যে রাজ্য়ে বিধায়কদের দলবদল আকছার ঘটে, সেখানে বিরোধী বিধায়কের এই বৈঠক ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা বলছেন, "এরা দেরিতে হলেও এরা বুঝতে পেরেছে যে বাংলায় একমাত্র দিদি ছাড়া বিকল্প কোনও রাস্তা নেই। ভাঙড়ের থেকে তো শিকড় উপড়ে গেছে। হতাশাগ্রস্ত হয়ে দিদির কাছে পৌঁছে গেছে। ক'দিন পরে ছুটি হয়ে যাবে। তাই এখন থেকে যদি দিদির কাছে গিয়ে দিদিকে যদি ম্য়ানেজ করে যদি তৃণমূল কংগ্রেসে ঢোকা যায় তাহলে বোধহয় নিজের জায়গাটা বাঁচবে।''