আশাবুল হোসেন, উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায় : বেসরকারি হাসপাতালের লাগামছাড়া বিল নিয়ে অভিযোগ ভুরি ভুরি! সেখানে চিকিৎসা করাতে গিয়ে, মধ্য়বিত্তের কার্যত ঘটি-বাটি বিক্রির জোগাড় হয়! এই জায়গায় স্বচ্ছতা আনতে, এবার বিধানসভায় পাস হল - দ্য় ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্য়াল এস্টাবলিশমেন্টস (রেজিস্ট্রেশন, রেগুলেশন অ্য়ান্ড ট্রান্সপারেন্সি) অ্য়ামেন্ডমেন্ট বিল ২০২৫। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তির সময় যে প্য়াকেজ দেওয়া হয়, পরে সেখানে কোনও বাড়তি খরচ যোগ করা যাবে না। চিকিৎসার খরচ, হাসপাতালে এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে সকলে দেখতে পাবেন।
প্রস্তাবিত খরচের থেকে, চার্জ বাড়লে, কত শতাংশ বেশি নেওয়া যেতে পারে, তা স্বাস্থ্য় দফতর ঠিক করবে। খরচ বৃদ্ধির বিষয়টাও স্বাস্থ্য় দফতরকে জানাতে হবে। ২৪ ঘণ্টা অন্তর জানাতে হবে রোগীর পরিজনদের।
বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে চিকিৎসা নিয়ে, স্বাস্থ্য় বিষয়ক রেগুলেটরি কমিটির কাছে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্য়ে অন্য়তম অভিযোগ, প্য়াকেজের বাইরেও অতিরিক্ত টাকা নেওয়া। সেই সমস্য়া দূর করতেই, এবং বেসরকারি হাসপাতালের বিলে নিয়ন্ত্রণ করতেই এই সংশোধনী আনা হয়েছে বলে দাবি রাজ্য় সরকারের। স্বাস্থ্য় প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মনে করছেন, এই পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের জন্য বড় উপকারী। ' রোগীকে যত টাকা বিল করছে, সেটা রোগী জানবে। তাকে যদি ২টো ইঞ্জেকশন দিয়ে ২০টা ইঞ্জেকশনের বিল করে, তাহলে সেটা রোগী বুধতে পারবে। এইটার জন্য়ই তো এই বিলটা করা। স্বচ্ছতা থাকবে। '
তবে এই বিল নিয়ে আশাবাদী নন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী মনে করছেন, 'এরপর ব্ল্য়াকমেলিং করে, নার্সিং হোম, বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস টাকা তুলবে... যে বিলটা এনেছে, সেই বিলটা ত্রুটিপূর্ণ বিল। ' তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, নির্দিষ্ট প্যাকেজ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ার পর কোনও কারণে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, আরও কিছু চিকিৎসা দিতে হয়, সেক্ষেত্রে কী হবে, তা এই বিলে স্পষ্ট করে বলা নেই। তাই এই বিল নিয়ে সন্তুষ্ট নন তিনি।
বিলে বলা হয়েছে, নিয়ম ভঙ্গ করলে, কড়া ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। এমনকী সেই স্বাস্থ্য় প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এখন এই ব্যবস্থাগ্রহণের পর কতটা উপকৃত হন রোগী ও তাঁর পরিবার , সেটাই দেখার।