বিশ্বজিত্ দাস, খড়গপুর,পশ্চিম মেদিনীপুর : সোমবার খড়গপুরের ওল্ড সেটেলমেন্ট এলাকায় বাড়ির সামনেই গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছিল এলাকার পরিচিত মুখ, তৃণমূল কর্মী, ভেঙ্কট রাওকে। সেই ঘটনায় এবার গ্রেফতার হল এক তৃণমূল কর্মীই। আর তারপর থেকেই এই খুন ঘিরে শাসকদলের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। যদিও তা মানতে নারাজ তৃণমূল শিবির!
গ্রেফতার ৩
তৃণমূল কর্মী ভেঙ্কট রাও খুন হওয়ার ৫ দিনের মাথায়, শনিবার শুভম সোনার, ঈশ্বর রাও ও জে কৃষ্ণা রাও নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। ধৃত এই ৩ জনের মধ্যে শুভম সোনার এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত। চলতি বছর পুরভোটের আগে, তৃণমূলে যোগ দেন ধৃত শুভম।
খড়গপুর গ্রামীণের তৃণমূল বিধায়ক দীনেন রায়, খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা প্রদীপ সরকার ও তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার হাত থেকে তাঁকে তৃণমূলের পতাকা নিতে দেখা যায়। তৃণমূল সমর্থক খুনে অপর এক তৃণমূলকর্রমীই গ্রেফতার হওয়ায় তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।
খুন ঘিরে রাজনৈতিক তরজা
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই জেরে খুন বলে অভিযোগ বিজেপির। এদিকে, রাজনীতির রং না দেখে ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপি মুখপাত্র অরূপ দাস বলেছেন, যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এই গন্ডগোল ঘটেছে সেই দুই গোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দেয় প্রদীপ সরকার। তিনি খড়গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান। যে মার্ডার হয়েছে এবং যে মার্ডার করেছে তারা প্রদীপ সরকারের ঘনিষ্ঠ।এই শুভম সোনার মালঞ্চর একটি মার্ডার কেসের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। সেই বখরার জন্য ভেঙ্কট রাও মার্ডার হয়েছে।
যদিও এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি খড়গপুর পুরসভার তৃণমূল নেতা ও চেয়ারম্যান, প্রদীপ সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুজয় হাজরা বলেছেন, 'যে ছেলেটি কালকে গ্রেফতার হয়েছে সে পৌরসভা নির্বাচনের আগে আমাদের সাথে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে দলে যোগদান করেছিল। এই ছেলেটি আমাদের দলে যোগদান করেছিল এটা যেমন ঠিক। কিন্তু আমাদের দলে এরকম স্কিনিং করার কোন সুযোগ নেই। যে খুন করে সে খুনি। যে লুট করে সে লুটেরা। কোন রাজনৈতিক রঙ না দেখে আমরা সবাই মিলে একটা চেষ্টা করব খড়গপুরে এই ধরনের যাতে দুষ্কৃতী রাজ বন্ধ হয়।
ঘটনাক্রম ঠিক কীরকম
স্থানীয় সূত্রে দাবি, স্কুটারে চরে আসা, মুখ ঢাকা তিন দুষ্কৃতী ভেঙ্কটকে লক্ষ্য করে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পরপর গুলি চালায়। পুলিশ সূত্রে দাবি, নিহতের শরীরে ৭টি গুলি লাগে। ঘটনাস্থল থেকে ১১টি 7MM গুলির খোল পাওয়া যায়। পাওয়া যায়, কার্তুজ সহ ম্যাগাজিনও। পুলিশ সূত্রে দাবি, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে তিন আততায়ীর ছবি ধরা পড়েছে।
খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই খুন।
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর কনভয়-দুর্ঘটনায় প্রকাশ্যে সিসি ফুটেজ, কীভাবে দুর্ঘটনা? ঠিক কী হয়েছিল মারিশদায়?