কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের আগে বিধানসভায় বাজেট পেশ করল রাজ্য সরকার। সেখানে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। নতুন রাস্তা তৈরি এবং সংস্কারের পাশাপাশি একাধিক সেতু নির্মাণের ঘোষণা করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে, গঙ্গাসাগর সেতু, শিল্প সেতু। ইএম বাইপাস এবং নিউটাউনের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তুলতে নতুন উড়ালপুলের ঘোষণাও করেছে রাজ্য।(West Bengal Budget)


বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি জানান, রাজ্যের উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। সেই লক্ষ্যপূরণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুড়িগঙ্গা নদীর উপর LOT ৮ এবং সাগরদ্বীপের কচুবেড়িয়ার মধ্যে একটি ৩.১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণ হবে। সেতুটির নাম হবে ‘গঙ্গাসাগর সেতু’। (Mamata Banerjee)


রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এই সেতু নির্মাণের ফলে গঙ্গাসাগরে তীর্থে যাওয়া আরও সহজতর হবে।  পাশাপাশি, স্থানীয় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং এলাকার পর্যটনে জোয়ার আনতেও এই সেতু বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে। এই সেতু তৈরিতে ১২০০ কোটি টাকা খরচ পড়বে বলে জানিয়েছেন চন্দ্রিমা। এর মধ্যে প্রথম বছরের জন্য ২০০ কোটি বরাদ্দের ঘোষণা করেন তিনি। বাজেট পেশের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গঙ্গাসাগরের মতো এত বড় মেলার জন্য সেতুর প্রয়োজন রয়েছে। তার জন্য বার বার কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। তাই নিজেরাই সেতু তৈরির কাজে হাত দিচ্ছেন তাঁরা।


আরও পড়ুন: West Bengal DA Increase: আরও ৪ শতাংশ বাড়ল DA, বাজেটে ঘোষণা মমতা সরকারের


পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান-আরামবাগ রাস্তায় (SH-7) ‘কৃষক সেতু’র সমান্তরালে, দামোদর নদীর উপর ‘শিল্প সেতু’ নামের একটি চার লেন বিশিষ্ট নতুন ৬৪০ মিটার দীর্ঘ সেতু তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য। বলা হয়েছে, এই সেতুটির মাধ্যমে স্থানীয় পণ্যের পরিবহণ এবং গণপরিবণে বিশেষ সুবিধা হবে। স্থানীয় মানুষ যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই এলাকার অর্থনীতি আরও মজবুত হয়ে উঠবে আগামী দিনে।সেতুটি তৈরি করতে খরচ হবে ২৮৬ কোটি টাকা। তিন বছর সময় লাগবে সেতুটি তৈরি হতে। প্রথম বছরের জন্য রাজ্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এদিন।


নিউ টাউন এবং বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের মোড় থেকে নিউ টাউনের CG ব্লক সন্নিহিত মহিষবাথান পর্যন্ত একটি চার লেন বিশিষ্ট, ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালপুল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য। আগামী তিন বছরে তাতে খরচ হবে ৭২৮ কোটি টাকা। প্রথম বছরের জন্য এদিন ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।


রাজ্য সরকার জানিয়েছে, পথশ্রী-১, পথশ্রী-২ প্রকল্পে ৬, ৪৮৮ কোটি টাকা ব্যয় করেছে তারা। এখনও পর্যন্ত ২৬,৪৮৭ কিমি রাস্তার নির্মাণ এবং সংস্কার করেছে। পরিকাঠামো উন্নয়নের এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। তাই কেন্দ্র গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা সত্ত্বেও, রাজ্যবাসীর জন্য পথশ্রী-৩ প্রকল্পের ঘোষণা করেছে রাজ্য, তাতে প্রায় ৩ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা খরচ হবে। এর আওতায় ১২০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রামীণ রাস্তার নির্মাণ এবং সংস্কারও হবে।