কলকাতা: মুর্শিদাবাদে অশান্তি নিয়ে বিজেপির সঙ্গে আরএসএসকেও নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। জীবনের জ্বলন্ত সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে অশান্তি বাধিয়ে বিভেদের বিপজ্জনক খেলার অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজ্যবাসী শান্ত থাকার আর্জি জানালেন তিনি।
শান্তির বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর: ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে অশান্ত মুর্শিদাবাদ। প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘরছাড়া বহু মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন পাশের জেলায়। কেউ আবার ভিটে মাটি ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন ভিন রাজ্যে। অশান্তির এই আবহে এবার শান্তির বার্তা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছেন তিনি। পাশাপাশি এই অশান্তির ঘটনার জন্য একযোগে আক্রমণ করলেন বিজেপি এবং আরএসএস-কে।
খোলা চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন, "হঠাৎ করে বাংলায় খুব আক্রমণাত্মক বিজেপি, সঙ্গী আরএসএস । বাধ্য হয়েই বলতে হচ্ছে কুশ্রী মিথ্যার প্রচার চালাচ্ছে আরএসএস। একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে ব্যবহার করে চলছে বিপজ্জনক খেলা। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে ব্যবহার করে চলছে বিভেদের রাজনীতি। দাঙ্গার পিছনে থাকা দুর্বৃত্তদের দমন করা হচ্ছে, শান্ত থাকুন। আগুনের সঙ্গে খেলা করতে প্রথমে ওরা রামনবমীকে বেছে নিয়েছিল। কিন্তু বাংলায় রামনবমী পালিত হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। দাঙ্গা বাধাতে চায় বিজেপি ও তার সঙ্গীরা। বিজেপি ও তার সঙ্গীদের কথায় বিশ্বাস করবেন না।'' আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। জীবনের জ্বলন্ত সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর অভিযোগে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার নামে, হিংসা ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু, অশান্তি নেপথ্য়ে কারা? কাদের জন্য় জ্বলল অশান্তির আগুন? অশান্তির জেরে এক কাপড়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য় হয়েছিলেন বহু মানুষ। আর যাঁরা কোনওমতে নিজের বাড়িতে রয়ে গেছেন, তাঁরা এক সপ্তাহ পরও আতঙ্ক ভুলতে পারছেন না। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছেই। এই আবহে গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি উপেক্ষা করেই মুর্শিদাবাদের দাঙ্গা বিধ্বস্ত এলাকায় ঘুরে দেখলেন রাজ্যপাল। যান নিহতের বাড়িতে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বললেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। আবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে না পারায়, বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। শনিবার প্রথমে জাফরাবাদে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের বাড়িতে যান রাজ্যপাল। তাঁকে দেখা মাত্রই কান্নায় ভেঙে পড়ে নিহতের পরিবার। এখান থেকে বেরিয়ে সুভাষ দাস ও শিপ্রা দাসের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িও দেখতে যান রাজ্যপাল।