ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা, সঙ্গে অপরিকল্পিত নগরায়ন (Urbanisation)। এই কারণে বছরের শেষেও ডেঙ্গির (Dengue Situation) দাপট কমছে না। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেই সঙ্গে তাঁদের পরামর্শ, জ্বর হলেই চিকিৎসকের কাছে যান।


বছর শেষ হতে চললেও, কমছে না ডেঙ্গির দাপট


ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, অক্টোবরের শেষ। বর্ষার বিদায় এবং শীত আসার সময়। কিন্তু, কমার বদলে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গির প্রকোপ!! যা দেখে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের। 


ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্তের জন্য আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার পাশাপাশি, অপরিকল্পিত নগরায়নকেও দায়ী করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, "আনপ্ল্যান্ড আরবানাইজেশন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, জোড়া চাপে ডেঙ্গির এই পরিস্থিতি। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য বৃষ্টি হচ্ছে।"


দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গ, রাজ্য জুড়েই অবনতি হচ্ছে ডেঙ্গি পরিস্থিতির। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সাপ্তাহিক আক্রান্ত ও সংক্রমণ বৃদ্ধির নিরিখে সব থেকে খারাপ অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনার।সেখানে গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬২৭ জন। 


দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। সেখানে এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩৩ জন। তৃতীয় স্থানে হুগলি। সেখানে একসপ্তাহে আক্রান্ত ৬৭৬।  কলকাতায় এক সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯৬ জন।


আরও পড়ুন: TET Agitation: পুলিশ দিয়ে তুলে দেওয়ায় নয়, আলোচনাতেই সম্ভব সমাধান, মুখ খুললেন শীর্ষেন্দুও


পুর এলাকার নিরিখে আবার কলকাতার পরই রয়েছে ব্যারাকপুর পুরসভা। সেখানে এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪৮। তৃতীয় স্থানে রয়েছে হাওড়া পুরসভা। যেখানে এক সপ্তাহে ২৭৫জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন।


আশঙ্কার বিষয় হল, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, "ডেঙ্গি বাড়তে থাকবে, এরকম চলবে, যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। সাধারণ এই সময় কমে আসত, কিন্তু হচ্ছে না এখন। এটা হবেও না। বৃষ্টি হচ্ছে, একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ যা করছে...মৃত্যু যখন বাড়ছে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।"


এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, জ্বর, গায়ে র‍্যাশ, মাথা ব্যাথা, চোখের চারপাশে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, খিদে না পাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।


উপসর্গ দেখলেই চিকিৎসক দেখানোর পরামর্শ


নাইসেড সূত্রে খবর, এবার ডেং থ্রি প্রজাতির প্রকোপ বেশি। সেই কারণেই উপসর্গ ও শারীরিক অবনতির গতিপ্রকৃতি নিশ্চিতভাবে বুঝে উঠতে সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসকদের। চিকিৎসক অজয় সরকার বলেন, "এ বছর ডেঙ্গি যা হচ্ছে, ২০-৫০ এর মর্ধবর্তীরা হঠাৎ করে মারা যাচ্ছে। এটা হওয়ার কারণ, ডেঙ্গি প্রজাতি অন্যরকম, প্রকোপ আলাদা হচ্ছে, যাদের দ্বিতীয়বার ডেঙ্গি হচ্ছে...আচমকা অসুস্থ হয়ে মাল্টি অর্গান ফেলিওয়ের।" শীতেও কি রেহাই দেবে না ডেঙ্গি? এটাই এখন সবার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।