সন্দীপ সরকার, কলকাতা : ডেঙ্গি-আতঙ্কের যেন শেষ নেই ! বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে (Beleghata ID Hospital) ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হল। ডেঙ্গি শক সিনড্রোম আক্রান্ত হয়ে ৫৪ বছরের ভরত দাসের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার শাসন থানা এলাকায় ।
গত ১২ নভেম্বর বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর গতকাল রাত ৯টার পরে তাঁর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে বেসরকারিভাবে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৭১।
আগেই ভেঙে গেছে, গত পাঁচ বছরের ডেঙ্গি সংক্রমণের রেকর্ড। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এবছর ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ৪৭৫, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ ! সংক্রমণ গ্রাফের সেই ঊর্ধ্বগতি এখনও অব্যাহত। ডেঙ্গিতে (Dengue) লাগাম পরার কোনও লক্ষণই নেই। ভয়াবহ ছবি বাংলায় । সম্প্রতি জানা যায়, দেশে সবথেকে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত পশ্চিমবঙ্গে।
বর্ষামঙ্গল শেষে, ফুরিয়েছে শরতও। হেমন্তের দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীত। উত্তুরে হাওয়ার হাত ধরে রাজ্যজুড়ে শীতের আমেজ। কিন্তু এখনও দাপট কমেনি ডেঙ্গির ! মশার উপদ্রব কমছে কই। এখনও উদ্বেগজনক ডেঙ্গি পরিস্থিতি।
স্বাস্থ্য়-বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা ছিল, উৎসবের মরশুমে হয়তো কিছুটা হলেও ডেঙ্গি-সংক্রমণে রাশ পড়ানো গিয়েছে। কিন্তু সেই আশা যে ভুল, সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মহালয়া থেকে দশমী পর্যন্ত ডেক্রি আক্রান্তের পরিসংখ্যানে। এহেন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা তাই বিভিন্ন পুরসভাগুলিকে আরও একবার সতর্ক করছেন যে কোনও ভাবেই মশা দমনের কাজে ঢিলেমি দেওয়া যাবে না। এখন আবহাওয়ার যা গতিপ্রকৃতি তাতে বৃষ্টি হয়নি ঠিকই। ফলে নতুন করে হয়তো জলও জমবে না। তবে আগেই জমা-জলে যে সব মশার জন্ম হয়েছে, সেই মশার উৎসস্থলগুলিকে ধ্বংস করতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে আগামী বছর ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে এখন থেকেই আধা শহরাঞ্চলে জল ও জঞ্জাল নিষ্কাশনে ব্য়বস্থা নিচ্ছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। প্রত্য়েক মাসে কাজের পর্যালোচনা করা হবে। শহর এবং গ্রামাঞ্চলেও জল ও আবর্জনা নিষ্কাশনে নজর দেওয়া হবে।
এর আগে আলোর উৎসবের দিনেও রাজ্যে মৃত্যু হয় এক ডেঙ্গি আক্রান্তের। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা সাক্ষীগোপাল ধীবর। পরিবার সূত্রে খবর, জ্বর নিয়ে বেশ কয়েকদিন বাড়িতেই ছিলেন তিনি। রক্ত পরীক্ষার পর ডেঙ্গি ধরা পড়তে, পয়লা নভেম্বর বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করা হয় ওই ব্যক্তিকে। ১২ তারিখ ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় লাভপুরের বাসিন্দার।