তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার সাঁতরা বাড়ির বড় বৌমা হীরাবালা সাঁতরা। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার শাশুড়ি পূজিতা হলেন মা কালীর রূপে (Kalipuja 2023)। প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে এই রীতি।


বড় বৌমাকে কালীর আসনে বসিয়ে পুজো


গলায় রক্ত জবা, কপালে লাল চন্দন এই বেশেই পূজিতা হন মা মুন্ডমালিনী। হ্যাঁ ঠিক এরকমই দেখতে অভ্যস্ত মায়ের ভক্তরা। কিন্তু এক্ষেত্রে মা কালী কোনও চিন্ময়ী রূপের নন। মা সাক্ষাৎ জীবন্ত। যেখানে মন্ডপে মন্ডপে বা বিভিন্ন পারিবারিক পুজোতে দেবী কালীর মূর্তি পুজো করা হয়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের মির্জাপুরে সাঁতরা বাড়িতে মূর্তির পরিবর্তে বড় বৌমাকে কালীর আসনে বসিয়ে পূজিত হতে দেখা গেল। বছরের পর বছর হয়ে আসছে এই আচার। 


মূর্তিপুজো না করার স্বপ্নাদেশ, মানবীকেই দেবী হিসাবে পুজো  


পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্দাসের মির্জাপুরে সাঁতরা পরিবারের কোনও এক পূর্ব পুরুষ মূর্তিপুজো না করার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। পরিবর্তে সোনা অথবা অষ্টধাতুর পুজো করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই সময় আর্থিক সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। সেজন্য মানবীকেই দেবী হিসাবে পুজো করা হয়। সেই থেকে আজও পরিবারের বড়ো বধূকে পুজো করার নিয়ম চলে আসছে।


 জীবন্ত কালীর পুজো দেখতে সাঁতরা বাড়িতে ভিড় ভক্তদের


পরিবারের গৃহবধূ হীরাবালা সাঁতরা গত ৩৮ বছর ধরে মা কালীরূপে পুজিতা হয়ে আসছেন। পুজোর দিন তাঁকে দেবীর আসনে বসানো হয়। গলায় রক্তজবার মালা ও কপালে রক্তচন্দনের তিলক আঁকা হয়। শোনা যায়, পুজোর সময় স্বয়ং মা কালী হীরাবালাদেবীর শরীরে ভর করায় তিনি কার্যত ঘোরের মধ্যে থাকেন। পুরোহিত তাঁকে দেবী রূপে পুজো করেন।স্বাভাবিকভাবেই নানা জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা জীবন্ত কালীর পুজো দেখতে আসেন। এবং সাঁতরা বাড়িতে ভিড় জমান। 


আরও পড়ুন, আজ আগ্রা-সহ পেট্রোলের দাম কমল একাধিক শহরে, কী দর কলকাতায় ?


'প্রায় ৩৮ বছর ধরে আমাকে দেবীর আসনে বসানো হয়'


হীরাবালা দেবী বলেন, 'প্রায় ৩৮ বছর ধরে আমাকে দেবীর আসনে বসানো হয়। মায়ের ইচ্ছাতেই আমি পবিত্র ওই আসনে বসি। পুজোর সময় আমি বাস্তব জগত থেকে যেনও হারিয়ে যাই। অদ্ভুত এক অনুভূতি আমাকে ঘিরে রাখে। পুজোর পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হই।'