সৌরভ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সন্দীপ সমাদ্দার , প্রদ্যোৎ সরকার, কলকাতা: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নেওয়ার সময় ভাবুন, ঘরের লক্ষ্মী সুরক্ষিত তো ? প্রশ্ন তুলেছিলেন আর জি করের নির্যাতিতার মা। এবার সেই প্রশ্নেরই অনুরণন আম আদমির মধ্যেও । সামনেই শারদোৎসব। আর সেই উপলক্ষ্যে বাংলার বহু ক্লাবকেই ৮৫ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদানের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনে সুবিচারের দাবিতে, রাজ্য সরকারের অনুদান না নেওয়ার কথা জানাল আরও পুজো কমিটি। উত্তরপাড়ায় শক্তি সঙ্ঘ, দক্ষিণ কলকাতার হাইল্যান্ড পার্ক উৎসব কমিটির প্রত্যাখ্যানের পথে হাঁটলেন জেলার আরও কয়েকটি পুজোর উদ্যোক্তারা।
রাজপথ থেকে অলিগলি। আর কিছুদিন পর যার উৎসবের আলোর ঢাকার কথা। সেই পথজুড়ে এখন অবশ্য় শুধুই শোক, দুঃখ, প্রতিবাদের ছবি। এক মায়ের সন্তান বিয়োগ যেন বঙ্গবাসীকেই আত্মীয়হারা করেছে। লজ্জায় মাথা হেঁট বাঙালির। এখন শুধুই বিচার চায় বাংলা। আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের বিচার চেয়ে উত্তরপাড়া জয়কৃষ্ণ স্ট্রিটের 'আপনাদের দুর্গাপূজা' বারোয়ারি ও নদিয়ার বেথুয়াডহরি টাউন ক্লাবও সরকারি অনুদান প্রত্যাখানের সিদ্ধান্ত নিল। এর আগে হুগলির উত্তরপাড়ার শক্তি সংঘ, দক্ষিণ কলকাতার হাইল্যান্ড পার্ক উৎসব কমিটিও অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছিল।
পুজোয় সরকারি অনুদানের জন্য় আবেদন করবে না বলে জানিয়েছে হুগলির তারকেশ্বরের মা শারদ জননী দুর্গোৎসব কমিটি। স্থানীয় আস্তারা গ্রামে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত হয় এই পুজো। আর জি কর-কাণ্ডে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন পুজো উদ্য়োক্তা মহিলারা। কমিটির সদস্য বর্ণালী জানান, 'এই বছর এইরকম পরিস্থিতিতে আর আমাদের আবেদন করার মতো ইচ্ছা নেই। আমরা চাই যারা দোষী তাদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি হোক। এটাই আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।'
'আপনাদের দুর্গাপূজা'র সদস্য প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য জানালেন, ' আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে সারা রাজ্য এবং দেশজুড়ে তথা ভারতবর্ষের বাইরেও এর প্রতিবাদ চলছে। রাজ্য সরকারে যে অনুদান ৮৫ হাজার টাকা সেটা আমরা গ্রহণ করছি না। বিচার চাইছি।'
মঙ্গলবার সন্ধেয় নদিয়ার বেথুয়াডহরিতে আর জি কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল বের করে। মিছিল থেকেই মাইকে ঘোষণা করা হয় অনুদান প্রত্য়াহারের কথা। বেথুয়াডহরি টাউন ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে,পুজোর অনুদান তারা গ্রহণ করছে না। 'এই ধর্ষণের আমরা সুতীব্র প্রতিবাদ জানাই', বলছেন উদ্যোক্তারা।
দিনকয়েক আগেই নিহত চিকিৎসকের মা সবার উদ্দেশে বলেছিলেন, লক্ষ্মীরভাণ্ডারের সুবিধা নেওয়ার আগে ভাববেন, তাঁদের লক্ষ্মী সুরক্ষিত কিনা। রাখি বন্ধনের বিকেলে পুরুলিয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নীলকুঠি ডাঙায় উঠল সেই স্লোগানই। উই ওয়ান্ট জাস্টিস লেখা কালো রাখি পরিয়ে দেওয়া হয় পথচারীদের।
হাতে আর মেরেকেটে দেড় মাস। তারপরই ঢাকে কাঠি পড়বে বাঙালির প্রাণের উৎসবের। কিন্তু, এখন ঘরের মেয়ের বিচার চায় বাংলা।
আরও পড়ুন, সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও কীভাবে এত দাপট? সঞ্জয়ের নাম জিজ্ঞেস করতেই দৌড় ASI-এর
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে