প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : SSC নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ( SSC Recruitment Scam ) এই প্রথম লুকআউট নোটিস সার্কুলার জারি করল ইডি ( ED )। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের  ( Primary Board Of Education ) প্রাক্তন সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যর ( Manik Bhattacharya ) ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যর নামে সার্কুলার জারি হয়েছে।

ইতিমধ্যেই এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া ও অভিবাসন দফতরের কাছে সৌভিকের ছবি, পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য ও নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক-পুত্রের ( Souvik Bhattacharya ) বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, সেই সমস্ত তথ্য পাঠানো হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর, আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাতে মানিক ভট্টাচার্যর পাশাপাশি, তাঁর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য, ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্য এবং মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের নাম ছিল। 


এর আগে সৌভিক ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ২২ ফেব্রুয়ারি সৌভিকের জামিন আবেদনের শুনানি রয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, তার আগে মানিক-পুত্রের গা ঢাকা দেওয়ার আশঙ্কাতেই লুক আউট সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মানিক ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি করে সিবিআই ( CBI )। 


অন্যদিকে, গতকাল আদালতে ইডি দাবি করে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ( Partha Chatterjee ) পাশাপাশি, মানিক ভট্টাচার্যকেও টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ। ইডি সূত্রে দাবি, জেরায় কুন্তল জানিয়েছেন, মানিকের কাছে কোটি কোটি টাকা গিয়েছে। এই টাকা পাঠানো হত ৩ জন হ্যান্ডলারের মাধ্যমে। গোপাল দলপতি এদেরই একজন বলে ইডি-র জেরায় দাবি করেন কুন্তল ( Kuntal Ghosh ) । যদিও টাকা নেওয়ার কথা আগেই অস্বীকার করেন গোপাল দলপতি। এর প্রেক্ষিতে কুন্তল যাদের নাম করেছেন, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করার কথা ভাবছে ইডি। পাশাপাশি, প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে কুন্তলকেও জেরা করতে চায় তারা। 


গত ৮ ফেব্রুয়ারি, নগর দায়রা আদালতে মানিক ভট্টাচার্যর জামিনের বিরোধিতায় বিস্ফোরক দাবি করে ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি ছিল, বেসরকারি বিএড কলেজ, ডিএলএড কলেজ ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ সংস্থাকে অনুমোদন ও NOC পাইয়ে দিতে লক্ষ লক্ষ টাকা নিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্য। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কটা ছিল ৬-৮ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ২-৫ লক্ষ টাকা নিতেন। ইডি-র দাবি, পার্থর ক্ষেত্রে তাঁর ঠিক করা কোনও লোকের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়া হত। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, মানিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া একটি সিডি-র একটিমাত্র ফোল্ডারে প্রায় ৪ হাজার চাকরিপ্রার্থীর নাম মিলেছে। এদের মধ্যে আড়াই হাজারেরও বেশি চাকরি পেয়েছেন। অথচ জেরায় মানিক দাবি করেন, তিনি এসবের কিছুই জানেন না। ইডি-র দাবি, মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, বাতিল ও ফেল করা চাকরিপ্রার্থীদের পাস করাতে ১ লক্ষ ও নিয়োগ পাইয়ে দিতে ৫ লক্ষ টাকা নিতেন মানিক।