সুমন ঘড়াই, হাওড়া : রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ১০০ দিনের কাজ। এমন অবস্থায় ১০০ দিনের কাজে যারা নথিভুক্ত, তাঁদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (West Bengal Government) গত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর এবার রাজ্যের প্রশাসনিক দফতর নবান্নের (Nabanna) তরফে নির্দেশিকা জারি করে যেমন জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।


রাজ্যের মুখ্যসচিবের (Chief Secretary) সই করা যে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ১০০ দিনের কাজের জন্য যাঁরা নথিভুক্ত, তাঁদেরকে বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দফতরে কাজে লাগাতে। বিভিন্ন আনস্কিলড লেবারদের কাজ তথা প্রশিক্ষণহীন কর্মচারি হিসেবে বিভিন্ন সরকাারি দফতরের কাজে ১০০ দিনের কাজে নথিভুক্তদের ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি নির্দেশিকা আরও জানাচ্ছে, কোন বিভাগে কতজনকে কাজে লাগানো হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখবেন প্রতিটি বিভাগের নোডাল অফিসার। পাশাপাশি নথিভুক্তরা ঠিক সময়ে কাজ পাচ্ছেন কি না, সেটা নিশ্চিত করার জন্য অফিসারদের কাজে লাগানো হবে বলেও জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়।


কেন্দ্রের বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ


কেন্দ্রীয় সরকারে বিরুদ্ধে ১০০ দিনের প্রকল্প চালাতে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ রাজ্য সরকারের। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বারবার যে অভিযোগ তুলেছেন। পাশাপাশি একাধিকবার কেন্দ্রের কাছে অর্থের জন্য দরবারও করেছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাঝে তুলেছেন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে রাজ্যের বকেয়া অর্থের প্রসঙ্গ। কিন্তু তারপরও এখনও সুরাহা মেলেনি।


১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকায় অনেক নথিভুক্তদেরই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আর্থিক সমস্যার পাশাপাশি রাজনৈতিক টানাপোড়েনে প্রকল্প বন্ধ থাকায় তাঁদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভও। এই অবস্থায় ১০০ দিনের কাজে নথিভুক্তদের বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দফতরের কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত তাঁদের মুখে হাসি ফোটাবে বলেই প্রত্যাশা ওয়াকিবহাল মহলের।



আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্তরা মূলত গ্রামেই থাকেন। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারকে বারবার ঋণ নিয়ে নিশানা করছে বিরোধীরা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে আবেদন করেছিলেন 'রাজ্যকে ঋণ দেবেন না, ঋণ দিলে অপব্যবহার হবে'। তাঁর দাবি, 'দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ঋণ নেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা পার করে ফেলেছে রাজ্য। রাজ্যের ঘাড়ে ঋণের বোঝা অন্তত ৬ লক্ষ কোটি টাকা।' 


আরও পড়ুন- ভাল নয় আর্থিক অবস্থা, বেশি ডিএ দিতে গেলে আসতে পারে আর্থিক বিপর্যয়, কার্যত মেনে নিল রাজ্য সরকার