কলকাতা: দুই নব নির্বাচিত বিধায়কের শপথ ঘিরে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তীব্র হচ্ছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ইচ্ছাকৃত ভাবে শপথগ্রহণ ফেলে রাখছেন বলে অভিযোগ শাসকদলের। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তাই বিধানসভার সিঁড়িতে ধর্নায় বসেছেন উপবির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার। কিন্তু রাজ্যপালের অপেক্ষায় সায়ন্তিকা এবং রেয়াত যখন বিধানসভার সিঁড়িতে বসে, সেই সময় রাজ্যপাল রওনা দিলেন দিল্লির উদ্দেশে।- (CV Ananda Bose)


গত ৪ জুন বরানগর এবং ভগবানগোলা উপনির্বাচনের ফলঘোষণা হয়, যাতে সায়ন্তিকা এবং রেয়াত জয়ী হন। কিন্তু তার পর একমাস কাটতে চললেও, এখনও বিধায়ক হিসেবে শপথ নিতে পারেননি সায়ন্তিকা এবং রেয়াত। সেই নিয়ে বিস্তর চিঠি চালাচালিও হয়েছে। রাজ্যপাল সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে রাজভবনে এসে শপথ নিতে বলেছেন। কিন্তু বিধায়কদের বিধানসভাতেই শপথ নেওয়া দস্তুর যেখানে, কেন তাঁরা রাজভবনে শপথ নেবেন, প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল সরকার। রাজ্যপাল চাইলে বিধানসভায় এসে সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন বলেও জানানো হয়। (West Bengal Assembly)


বুধবার পর্যন্ত সেই জট কাটেনি, তাতেই এদিন বিধানসভার সিঁড়িতে ধর্নায় বসেন সায়ন্তিকা এবং রেয়াত। রাজ্যপালের জন্য অপেক্ষা করছেন বলে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সেখানে বসেন তাঁরা।সৌগত রায়, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের অন্য বিধায়করাও সেখানে তাঁদের পাশে এসে জড়ো হন। সায়ন্তিকা এবং রেয়াত জানিয়েছেন, একমাস হতে চলল, এখনও শপথ নিতে পারেননি তাঁরা। মানুষকে যে কথা দিয়েছিলেন, তা রাখতে পারছেন না, কাজ করতে পারছেন না। তাই রাজ্যপাল যেন তাঁদের উপর দয়া করেন, আর্জি জানিয়েছেন।


আরও পড়ুন: Sayantika-Reyat: 'দয়া করুন আমাদের উপর', শপথ নিয়ে জটিলতা, বিধানসভার সিঁড়িতে রাজ্যপালের অপেক্ষায় সায়ন্তিকা-রেয়াত


কিন্তু বিধানসভায় যাওয়া তো দূর, এদিন সায়ন্তিকা-রেয়াত বিধানসভার সিঁড়িতে বসে থাকাকালীনই রাজভবন থেকে সোজা দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন রাজ্যপাল। সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি তিনি। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক্তিয়ার নিয়ে আইনি পরামর্শ নেবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। সেই আবহে আজ দিল্লি রওনা দিলেন তিনি। ফলে আজও সায়ন্তিকা এবং রেয়াতের শপথগ্রহণ ঝুলেই রইল। 


শপথের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি না শপথবাক্য না পড়ালে, তাঁর মনোনীত কোনও ব্যক্তি পড়াতে পারেন। এই ধরনের ক্ষেত্রে বিধানসভার অধ্যক্ষের হাতেই তিনি দায়িত্ব তুলে দেন। এর দরুণ ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনেই শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন তদানীন্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ নিয়েও বিস্তর টানাপোড়েন চলে। তিনিও শেষ পর্যন্ত রাজভবনেই শপথ নিয়েছিলেন। যদিও রাজ্যের দাবি, বিধানসভা সাংবিধানিক রীতি মেনেি চলছে।