সন্দীপ সরকার এবং ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: দেশে (India) টেলি মেডিসিন (Telemedicine) পরিষেবায় দ্বিতীয় পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ প্রকল্প শুরুর প্রায় ৯ মাসের মাথায় নতুন নজির গড়ল স্বাস্থ্য দফতর (Health Department)। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের করা সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। ডায়াবিটিস (Diabetes), রক্তচাপ (Blood Pressure), ক্যানসার (Cancer) থেকে শুরু করে স্ট্রোকের (Stroke) চিকিৎসা পর্যন্ত হচ্ছে টেলি মেডিসিন পদ্ধতিতে। 


শিরোপা পেল বাংলা


করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মুকুটে নতুন পালক। টেলি মেডিসিন পরিষেবায় দেশে দ্বিতীয় পশ্চিমবঙ্গ। প্রথম স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের একটি সমীক্ষায় কৃতিত্বের শিরোপা পেয়েছে এরাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। 


স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, "কীভাবে প্রান্তিক মানুষদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা সেই অংশটুকু ছোট করে বলিয়ে দিও।" কেন্দ্রের সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রকল্প চালুর পর থেকে শনিবার পর্যন্ত এরাজ্যের প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ টেলি মেডিসিন পরিষেবার সুবিধা পেয়েছেন। 


গত বছর করোনা পরিস্থিতি যখন তুঙ্গে সংক্রমণ আতঙ্কে অনেক চিকিৎসকের চেম্বার পর্যন্ত যখন বন্ধ তখন টেলি মেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবায় জোর দেয় স্বাস্থ্য দফতর। মূলত প্রত্যন্ত ও প্রান্তিক এলাকার রোগীদের কথা মাথায় রেখে শুরু হয় ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ পরিষেবা।


টেলিমেডিসিনে সুস্থ 


ডায়াবিটিস, রক্তচাপ, ক্যানসারের চিকিৎসা তো আছেই...বর্তমানে স্ট্রোকের ক্ষেত্রেও টেলি মেডিসিন পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। বারাসাতের বছর ৬৫ এর নবপল্লির বাসিন্দা কমল পাল স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বারাসাত হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর সিটি স্ক্যান রিপোর্ট ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ পোর্টালে আপলোড করা হয়। রিপোর্ট দেখে ওষুধ ও ইঞ্জেকশন প্রেসক্রাইব করেন বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস-এর চিকিৎসকরা। তাঁদের পরামর্শ মতো বারাসাত জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীকে তা দেন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই ব্যক্তি। 


আরও পড়ুন, ‘মুখ্যমন্ত্রী উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে আর ফিরতে দেবেন না অনুব্রতকে, বেরলেই কুকীর্তি ফাঁস হবে’


স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, "টেলিমেডিসিনে সাফল্য স্ট্রোক ম্যানেজমেন্টে। স্ট্রোক আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসা চলছে। আমরা সেটা করতে পারছি। কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে। জাতীয় কর্মসূচিতে ঢোকানোর চিন্তা ভাবনা করছে কেন্দ্র। সেরকমই আলোচনা হয়েছে।" মাঝে মাঝেই এক সরকারি হাসপাতাল থেকে আরেক সরকারি হাসপাতালে রোগী রেফার করার ঘটনা সামনে আসে। মাঝে পড়ে রোগীমৃত্যুর অভিযোগও ওঠে। 


টেলি মেডিসিন পরিষেবা সেই সমস্যাতেও রাশ টানবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, "মানুষকে বুঝতে হবে সব হাসপাতালে সব চিকিৎসা হয় না। এর জন্য আগামীতে হাসপাতালে বোর্ড লাগাব কোন হাসপাতালে কী চিকিৎসা হয়। টেলি মেডিসিন পরিষেবা সেই সমস্যাতেও রাশ টানবে বলে আশা।


গত বছর ২ অগাস্ট রাজ্যের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে টেলি-মেডিসিন পরিষেবা ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ চালু হয়। বর্তমানে ৪ হাজারের বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৭০০-র বেশি চিকিৎসক এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত।