ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: অ্য়ান্টিবায়োটিকের (Antibiotics Usage) যথেচ্ছ ব্য়বহারে অজান্তেই শরীরে বাসা বাঁধছে মাল্টি ড্রাগ রেসিস্ট্যান্স ব্যাকটেরিয়া (Antibiotic Resistance)। ফলে চিকিৎসার খরচ যেমন বেড়ে যাচ্ছে, তেমন রোগীর প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে প্রেসক্রিপশন (Prescription) ছাড়া ওষুধের দোকানে অ্য়ান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে এবং ব্যবহার রুখতে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য় স্বাস্থ্য দফতর।


প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর, মৎস্য দফতর, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছে স্বাস্থ্য দফতর। কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে?


১. প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধের দোকানে অ্য়ান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে নজরদারি বাড়ানো হবে
২. কৃষিক্ষেত্র, মৎস্য চাষ এবং পোল্ট্রি ফার্মে (Poultry Farm) অ্য়ান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্য়বহার হচ্ছে
৩. এইসব ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি করা হবে, নজরদারি বাড়ানো হবে গ্রামাঞ্চলেও
৪. প্রত্য়েক মাসে রিভিউ মিটিং হবে, সেখানে স্বাস্থ্য দফতর, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর ও মৎস্য দফতর রিপোর্ট পেশ করবে


চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, 'এই মূহূর্তে স্বাস্থ্য দফতরে যে মিটিং সকাল থেকে চলেছে। তাকে টপ লেভেল স্বাস্থ্য এজেন্ডা হিসেবেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার দেখছে। যারা এর স্টেকহোল্ডার, তাদের সবাইকে ডাকা হয়েছে। তাঁদের সবাইকে WHO-এর গাইডলাইন বলে দেওয়া হয়েছে। সরকারের নীতির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক তৃতীয়াংশ মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছেন। বাকি দুই তৃতীয়াংশ বাকি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ বাকি ক্ষেত্র সভ্যতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তার জন্য়ই এই কড়া ব্যবস্থা।'


কদিন আগেই একটি গবেষণা পত্র নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। রাজ্য পশু এবং মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছিল যে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে মানবদেহে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটিরিয়া বাসা বাঁধছে, ফলে প্রয়োজনের সময় কাজ করছে না অ্যান্টিবায়োটিক।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাঁদের শরীরে নানা কারণে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া বাসা বেঁধেছে, তাঁদের ক্ষেত্রেই মূলত এই সমস্যাগুলি দেখা যাচ্ছে। মানবশরীরে এই ব্যাকটিরিয়ার আগমন নিয়ে রাজ্যের পশু এবং মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় যে তথ্য সামনে এনেছে, তা হল, মাছ-মাংস থেকেও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ওই ব্যাকটিরিয়া। গবেষণা করতে গিয়ে কলকাতা এবং আশপাশের জেলাগুলির পোলট্রি ফার্মের মুরগির উপর পরীক্ষা চালানো হয়। সেখানেই দেখা গিয়েছে যে বিভিন্ন কারণে পোলট্রি ফার্মে দেদার ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক।


আরও পড়ুন: টাকার বিনিময়ে কাজ থেকে বদলি, বেসরকারি হাসপাতালে ম্যানেজারকে মারধর অস্থায়ী কর্মীদের