রুমা পাল, কলকাতা: প্রতিবেশী দেশ এবং ভিন্ রাজ্যের রোগীদের এবার টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার প্রস্তাব। মেডিক্যাল কলেজগুলোর পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে স্বাস্থ্য দফতরকে পরামর্শ দিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন (Health Services)। বলা হয়েছে, ভিন্ রাজ্যের রোগীদের পশ্চিমবঙ্গে আর বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা নয়।  প্রতিবেশী দেশের রোগীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম চালু করার পরামর্শ দিল রাজ্য় মানবাধিকার কমিশন। সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। (West Bengal Health Department)



পরিসংখ্যান বলছে, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে ভিড় করেন বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ-সহ বহু ভিন্ রাজ্যের রোগী। এমনকি ভিন্ দেশ থেকেও অনেকে পশ্চিমবঙ্গে আসেন চিকিৎসার জন্য, যার জেরে এরাজ্যের রোগীদের পরিষেবা দিতে যে কিছুটা হলেও সমস্যা হচ্ছে, তা স্বীকার করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এ বিষয়ে সরব হন মমতা। (Mamata Banerjee)


সেবার মমতাকে বলতে শোনা যায়, "আমাদের হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে পরিষেবার জন্য ভিড় বেড়েছে। ভিন্ রাজ্য এবং পড়শি দেশ থেকে রোগী আসছে...সবাইকে বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়া মুশকিল হচ্ছে। আমাদের রাজ্যের রোগীদের বিনামূল্যে পরিষেবা দেব। তার জন্য পরিচয়পত্র তৈরি করতে হবে। অন্য রাজ্য এবং পড়শিদেশ থেকে আসা রোগীদের জন্য একটা ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে কী করে পারব?" এবার মেডিক্যাল কলেজগুলোর পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে সেই মর্মেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশন স্বাস্থ্য দফতরকে পরামর্শ দিল। 


আরও পড়ুন: ‘আগের বার ১২টি আসন নিয়ে নিয়েছিলাম, আরও গেলে...’, লোকসভা নিয়ে মমতাকে কটাক্ষ দিলীপের


প্রতিবেশী দেশ এবং ভিন্ রাজ্যের রোগীদের টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের খাবার খরচ ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে তা উল্লেখ করে অন্তত ২০০ টাকা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। 


জ্যোতির্ময়বাবু বলেন, "একটা সুপারিশ করেছি যে, বাইরের নাগরিক যাঁরা এখানে চিকিৎসা করাতে আসবেন, তাঁদের চিকিৎসা হবে অবশ্যই। তবে তাঁদের থেকে খরচের টাকাটা তুলে নিতে হবে। যে টাকা খরচ হচ্ছে, সেটা অন্তত তুলে নিতে হবে। সেই টাকা আমাদের রাজ্যের রোগীদের চিকিৎসায় খরচ করা গেলে, আমাদের এখানকার রোগীরা লাভবান হবেন।" রাজ্য মানবাধিকার কনিশনের এই পরামর্শ কার্যকর করা নিয়ে স্বাস্থ্যভবনের তরফে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে বলে খবর।