রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ি অ্যাম্বুল্যান্সকাণ্ডে (Jalpaiguri Ambulance Case) দানা বাধল নতুন বিতর্ক! অসহায়ের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যকারীকেই যেতে হল পুলিশ হেফাজতে (Police Custody) ! আর যাঁদের বিরুদ্ধে সাহায্য না করার অভিযোগ, সেই অ্যাম্বুল্যান্স। সংগঠনের দাবি, ঘটনাটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যর সাজানো! এই গ্রেফতারির তীব্র প্রতিবাদ করেছে মৃতার পরিবার।


অ্যাম্বুলেন্স বিতর্ক


সরকারি হাসপাতালের শববাহী গাড়ি পাননি। দাবি মতো টাকা দিতে না পারায় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের মন গলেনি। অগত্যা মায়ের মৃতদেহ কাঁধে তুলে হাঁটতে শুরু করেছিলেন ছেলে। আর সেদিন মা হারা সন্তানকে সাহায্য করেছিলেন যিনি, এবার তাঁর ঠাঁই হল গারদে! আর যাঁরা সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ, তাঁদের নালিশের ভিত্তিতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ!


লজ্জার সেই ছবি


জলপাইগুড়ির এই লজ্জাজনক ছবি গোটা বাংলার মাথা হেঁট করে দিয়েছে। ঘটনা ঘিরে আরও জোরদার হয়েছে বিতর্ক। গত ৫ জানুয়ারি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় সত্তোরর্ধ্ব লক্ষ্মী দেওয়ানের। তাঁর ছেলের অভিযোগ, মায়ের মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য, সরকারি হাসপাতালের শববাহী গাড়ি পাননি।হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা ৩ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। যা তিনি দিতে পারেননি। অগত্যা মায়ের দেহ কাঁধে নিয়ে হাঁটা দেন ছেলে রামপ্রসাদ দেওয়ান।  


ঠিক কী অভিযোগ


তাঁর দাবি, খবর পেয়ে, অঙ্কুর দাস নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য তাঁকে একটি শকটের ব্যবস্থা করে দেন। এরই মধ্যে মঙ্গলবার অঙ্কুরের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে জলপাইগুড়ি জেলা অ্যাম্বুল্যান্স ইউনিয়ন। তাদের অভিযোগ, চিত্রনাট্য সাজিয়ে সবাইকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ওই সদস্য!


স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যকে কেন গ্রেফতার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশও। কিন্তু হাসপাতাল থেকে মায়ের দেহ নিয়ে কীভাবে বেরিয়ে গেলেন ছেলে? 
প্রশ্নের মুখে গাফিলতি স্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। উল্টোদিকে, আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে পুলিশি পদক্ষেপ প্রসঙ্গে কিছু বলতে নারাজ শাসক শিবির। শেষ অবধি জলপাইগুড়ি মৃতদেহকাণ্ডের রেশ কোন দিকে গড়ায়, সেটাই দেখার বিষয়।


আরও পড়ুন- মিড ডে মিলের চালের ড্রামে মরা ইঁদুর-টিকটিকি, চোখ কপালে শিক্ষক-শিক্ষিকা-অভিভাবকদের