কলকাতা: আদালতে মুখ পুড়ল পুলিশের। জামিন পেলেন কৌস্তভ বাগচী (Koustav Bagchi)।


ব্যাঙ্কশাল কোর্টে কৌস্তভ বাগচীর জামিন। আদালতে ধোপে টিকল না পুলিশের সওয়াল, জামিন পেলেন কৌস্তভ। কোর্টে ধাক্কা পুলিশের। জামিন পেলেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা।


গতকাল রাত ২.৩০ নাগাদ কৌস্তভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে যায় কলকাতার বড়তলা থানার পুলিশ। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পরে সকাল ৮টা নাগাদ গ্রেফতার হন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। তবে মাত্র সাড়ে আট ঘণ্টার মধ্যে ব্যাকফুটে প্রশাসন। কারণ, বিকেল ৪.৩০-এ কৌস্তভ বাগচীকে জামিন দিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট।


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, পাল্টা মন্তব্যের পরেই গ্রেফতার হন কৌস্তভ। তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি, উস্কানি, শ্লীলতাহানি-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, বিবৃতির জেরে হিংসা ছড়ানোর ধারায় এফআইআর দায়ের হয়। কৌস্তভের বিরুদ্ধে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করারও অভিযোগে এফআইআর দায়ের।


'মাঝরাতে আইনজীবীকে তুলে আনার অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে? কৌস্তভ কি কোনও সন্ত্রাসমূলক কাজে যুক্ত? কোর্টে প্রশ্ন করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি আরও সওয়াল করেন, 'কৌস্তভ বলেছেন, একটি বই বাজারে আছে। যে বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে বলা আছে। সেই বই এখনও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সরকার তো ব্যান করেনি। কেন ৪১ ধারায় নোটিস করল না পুলিশ? কেন মাঝরাতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকল? এরপর তো কোনও বিচারকের বাড়িতেও পুলিশ ঢুকে যাবে। কোথায় যাচ্ছে আইন ব্যবস্থা? রাত ৩টেয় বাড়িতে পুলিশ চলে এল! এত রাতে কারও বাড়িতে পুলিশ যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে।'


'পুলিশ ১০ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতে চেয়েছে মোটিভ খুঁজে বের করার জন্য? ওসি, আইও-কে শোকজ করা হোক,' আদালতে সওয়াল আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর। যে কোনও শর্তে কৌস্তভকে জামিনের আর্জি জানানো হয়। 'আইনজীবীরা বলছেন, আমরা আতঙ্কিত, উকিল সমাজ আজ আতঙ্কিত। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে কারও সম্পর্কে বাজে ধারণা ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে, আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন', সওয়াল সরকারি আইনজীবীর।


বিকাশরঞ্জন পাল্টা বলেন, '১০টা নাগাদ বক্তব্য সমাজমাধ্যমে পাওয়া গেল, আর রাত ৩টেয় পুলিশ বাড়িতে গেল? ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হোক, না হলে আমরা কোর্টরুম থেকে নড়ব না।' আদালতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এ-ও বলেন, 'হাইকোর্টের বিচারপতির বাড়ির বাইরে পোস্টারকাণ্ডে এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ, আর রাত তিনটের সময়ে বাড়িতে গিয়ে এক উকিলকে তুলে আনছে?' কৌস্তভের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। এখনই অর্ডার দিন, তারপর কোর্টে এই মামলা উঠবে, দাবি আইনজীবীদের।