করুণাময় সিংহ, অভিজিৎ চৌধুরী ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের মালদাতেই বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। জলপাইগুড়ি এবং মুর্শিদাবাদে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। প্রবল বৃষ্টি, বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস এখন বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই মেলে আবহাওয়া দফতরের কাছ থেকে। তা সত্ত্বেও জেলায় জেলায় বাজ পড়ে মৃত্যুর ঘটনা থামানো যাচ্ছে না। কেন আগে থেকে বাজ পড়ার পূর্বাভাস করা গেল না, সেই প্রশ্নই উঠছে মানুষের মনে। 


 কীভাবে একদিনে এত মানুষের মৃত্যু হল বজ্রপাতে? আলিপুর আবহাওয়া দফতর স্বীকার করেছে, উত্তরবঙ্গে রাডার নেই বলে, মালদার নির্দিষ্ট বাছাই করা অঞ্চলের স্থানীয় পূর্বাভাস দিতে পারেনা দফতর। প্রয়োজন রাডার। এই সমস্ত কাজের জন্য সেই রাডার কেনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে গতবছর।


আলিপুর আবহাওয়া দফতরের  পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন, 'আমাদের উত্তরবঙ্গে রাডার নেই। তাই স্থানীয় বজ্রপাতের পূর্বাভাস আমরা দিতে পারিনি। আমাদের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ইংরেজবাজার এলাকায় আছে তাই রতুয়া তে যা ঘটেছে আমরা তার আঁচ পাইনি। এত তীব্র বজ্রপাতের পূর্বাভাস আমরা দিতে পারিনি। আমাদের বিভাগীয় অনুসন্ধান চলছে।' 


শহর থেকে জেলায় যেমন বজ্রপাত বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মৃত্যুর ঘটনা। তাই বৃষ্টির পূর্বাভাসের মতো বাজ পড়ার সঙ্কেত জানা জরুরি হয়ে পড়ছে। 


মালদায়  বৃহস্পতিবার বজ্রপাতে শুধু মালদাতেই মৃত্য়ু হয়েছে ১১ জনের। এর মধ্যে ছিলেন সদ্যবিবাহিতা দম্পতি। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
অরিজিৎ দাস জানিয়েছেন, ' পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণ। যার ফলে বজ্র গর্ভ মেঘের সঞ্চার হচ্ছে বেশি। যার ফলে বারবার ঘটছে বজ্রপাত। আর বজ্রপাতের সাথে বাড়ছে মৃত্যু।' 


উত্তরবঙ্গে এই মর্মান্তিক বিপর্যয়ের মধ্যেই শনি, রবি ও সোমবার বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শনিবার উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। রবিবার দুই ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস। বইতে পারে দমকা হাওয়া। রবিবার পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টির সঙ্গে ৪০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে হওয়া। সোমবার কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের। 
মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে ৪০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে দমকা হাওয়া। মালদায় বাজ পড়ে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার মালদা মেডিক্যাল কলেজে যান রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন,
ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। ছিলেন মালদার জেলাশাসকও।