করুণাময় সিংহ, মালদা: গঙ্গার রিং বাঁধ ভেঙে প্লাবিত মালদার মানিকচকের ভুতনির বিস্তীর্ণ এলাকা। কুড়ি দিন ধরে জলবন্দি প্রায় এক লক্ষ মানুষ। জলের তলায় বেশ কিছু স্কুল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ১৫টি ফ্লাড সেন্টার খোলা হয়েছে মালদা জেলা প্রশাসনের তরফে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। 


২ বছর আগে ভেঙে গিয়েছিল মূল বাঁধ। এরপর প্রশাসনের তরফে রিং বাঁধ দেওয়া হয়। গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১১ অগাস্ট রিং বাঁধও ভেঙে যায়। আর সেই ভাঙা বাঁধ দিয়ে জল ঢুকতে আরম্ভ করে মালদার মানিকচকের ভূতনি এলাকায়। মালদা জেলা প্রশাসনের তরফে ১৫ ত্রাণ খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। তবে এখনও বেশিরভাগ মানুষই রয়েছেন তাঁদের বাড়িতে। উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত পুরোপুরি বিপর্যস্ত। দক্ষিণ চণ্ডীপুর হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ এলাকায় জলমগ্ন। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর। ভুতনি থানা, এলাকার বেশ কিছু স্কুল এমনকিীস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যন্ত জল ঢুবে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষাকালে যেভাবে বাঁধ মেরামতির কাজ করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে তার সবটাই জলে যাচ্ছে। তাঁদের কথায় শুখা মরশুমে কাজ করা হলে ভুতনিবাসীকে ভাসতে হত না। 


ত্রাণ নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। পর্যাপ্ত ত্রাণ মিলছে না বলে অভিযোগ জলবন্দি সাধারণ মানুষের। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌড়চন্দ্র মণ্ডল বলেন, "এটা ম্যানমেড বন্যা। প্রশাসন পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ দিচ্ছে কিন্তু সেই ত্রাণ লুটপাট করে নিচ্ছে তৃণমূলের লোকেরা। জেলা সিপিএম নেতা দেবজ্যোতি সিনহা বলেন, "ব্লক ও জেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ পাঠাচ্ছে কিন্তু ভূতনির তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুটি বিজেপির দখলে এবং একটি তৃণমূলের দখলে রয়েছে। অধিকাংশ সদস্য তাদের। ত্রাণ নিয়ে দলবাজি করছেন তাঁরা। লুটপাট হয়ে যাচ্ছে ত্রাণ। প্রশাসনের এই বিষয়ে দ্রুত নজর দেওয়া উচিত।'' যদিও বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, "পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ত্রাণ বন্টনের ব্যবস্থা করেছি। কোথাও ত্রাণ নিয়ে কোন অভিযোগ নেই।'' জল কমলে বাঁধ মেরামতির কাজ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে  নৌকায় বানভাসি এলাকা পরিদর্শন করলেন মালদার জেলাশাসক। জলবন্দি মানুষের অভিযোগ অস্বীকার করে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্য়বস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, "এলাকার মানুষের যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফুলহার  নদীর জল কমছে। তাই ভুতনির জলকে ফুলহার নদীতে পাম্পের মাধ্যমে নামানোর কাজও শুরু হচ্ছে। বিদ্যুতের অধিকাংশ ট্রান্সফর্মার জলের তলে থাকায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। তবে বেশিরভাগ এলাকায় জেনারেটারের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।''


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: Kakali Comment Controversy: 'ছাত্রীদের কোলে বসিয়ে পাস করানোর চল শুরু হয়েছিল' কাকলির মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক