কলকাতা: সাগরদিঘির উপনির্বাচনে পরাজয়ের পর চারিদিকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এমনকী, দলের অন্দরেও শুরু হয়ে গিয়েছে তুমুল চর্চা। যদিও সাগরদিঘি উপনির্বাচনে হার নিয়ে আত্মবিশ্লেষণে বসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, সংগঠনের দুর্বলতার কারণেই এই পরাজয়। সংখ্যালঘু ভোট কমার তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে মমতা বলেছেন, 'সংখ্যালঘুরা আমাদের সঙ্গে আছে, সংখ্যালঘু ভোট কমেনি। সাগরদিঘিতে হার হয়েছে নিজেদের দুর্বলতার কারণে।'
কালীঘাটের বৈঠকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার মধ্যে অন্যতম, এবার শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্বে আনা হয়েছে ব্রাত্য বসুকে। পাশাপাশি ১৯৯০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বাম আমলে কারা কারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র পেয়েছেন, ব্রাত্য বসুকে তার তালিকা বানাতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেছেন, 'দুর্নীতি তদন্ত আদালতে বিচার চলছে, আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করি না। সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি একজোট হয়ে অপপ্রচার করছে। হাতে হাত মিলিয়েছে, কোনও চিন্তা করবেন না, হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করুন।'
কালীঘাটের বৈঠকে দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি হাজি নুরুল ইসলাম। হাজি নুরুল ইসলামকে সরিয়ে সভাপতি করা হল মোশারফ হোসেনকে।
বীরভূম দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেই আগে তা জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। শুক্রবার কালীঘাটে বৈঠক শেষে ফের তা জানিয়ে দিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন সাংবাদিক বৈঠর করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁরা জানান, অবর্জারভার বা পর্যবেক্ষক নয়, বেশ কয়েকটি জেলা দেখবেন দলীয় নেতারা। যার মধ্যে দার্জিলিং-বর্ধমানের পাশাপাশি নদিয়াও দেখবেন অরূপ বিশ্বাস। হাওড়া-হুগলির দায়িত্বে ফিরহাদ হাকিম। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান দেখবেন মলয় ঘটক। দক্ষিণ দিনাজপুর দেখবেন তাপস রায়।
চলতি বছরই পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Poll)। কিন্তু বীরভূমে তৃণমূলের ভোট ম্যানেজার অনুব্রত মণ্ডল, গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) জেলবন্দি। ভোটের আগে তাঁর জামিন হবে কি না, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এই প্রেক্ষাপটেই, বীরভূম জেলা তৃণমূলের রাশ নিজের হাতে রাখার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় বৈঠকের পরে গত মাসে বীরভূমের খোলা মঞ্চ থেকেও সেই বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। এদিন কালীঘাটে বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। এদিন বৈঠকের পর ফের একবার চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়ে দিলেন বীরভূম দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।
লাল মাটির জেলা বীরভূমে, তৃণমূল আর অনুব্রত মণ্ডল সমার্থক। তাঁর প্রতি দলীয় নেতৃত্বের এতটাই ভরসা যে, জেলবন্দি হওয়ার পরও জেলা তৃণমূল সভাপতির পদে বহাল আছেন অনুব্রত। মাসখানেক আগে বীরভূমের মাটিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, “বীরভূমের মানুষ ভয় পাবেন না। অনেককে ভয় দেখানো হচ্ছে এজেন্সি আসবে। অনেককে ভয় দেখানো হচ্ছে, বিজেপি আসছে। কিচ্ছু না, নাথিং, চ্যালেঞ্জ নিলাম, বীরভূম আমি নিজে দেখব। আমার ২-১ জন নেতাকে জেলে পুরে রাখলেও, মনে রাখবেন ভোট দেয় মানুষ, ইলেকশনের সময় এমনিতেই তাঁকে ঘরের বাইরে বের হতে দিতেন না, এই জেলা আমি নিজে দেখব। ববি আমাকে সাহায্য করব। ৭ সদস্য রয়েছে।’’