কলকাতা: রাষ্ট্রপতির সফরের মাঝেই বকেয়া DA-র দাবিতে আজ সমস্ত রাজ্য সরকারি অফিস ও স্কুলে কালো ব্যাজ পরে ধিক্কার দিবস পালনের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। দুপুর ২টো থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে। রাজ্য সরকারের সমস্ত দফতরে কালো ব্যাজ পরে মিছিল করবেন DA-আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে, শহিদ মিনার চত্বরে DA-আন্দোলন আজ ৬১ দিনে পড়ল। আগামীকাল এখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধর্নামঞ্চে DA-আন্দোলনকারীরাও কাল অভিনব অনশন কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করেছেন।


আগামীকাল বুধবার, ফের কর্মবিরতির পরিকল্পনা করছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। একইদিনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে রেড রোডে অম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনই শহিদ মিনারে হবে তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের সমাবেশ। প্রধান বক্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার প্রস্তুতি নিয়ে স্পোর্টিং ইউনিয়ন টেন্টে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও যুব তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করল পুলিশ। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, স্পোর্টিং ইউনিয়ন টেন্টের সামনে মঞ্চ তৈরি করা হবে। মঞ্চের মুখ থাকবে শহিদ মিনারের দিকে। সংঘাত এড়াতে পরিকল্পনা করা হয়েছে, রেড রোড সংলগ্ন জর্জ টেলিগ্রাফ টেন্টের পাশে রাস্তা VIP-দের জন্য নির্দিষ্ট করার। আর, ডাফরিন রোডের ট্রাম লাইনের রাস্তা দিয়ে সভাস্থলে আসবেন তৃণমূলের ছাত্র এবং যুব নেতা-কর্মীরা। ৩০ মার্চ ডিএ আন্দোলনকারীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে মহা সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।


শহিদ মিনারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হলেন DA-আন্দোলনকারীরা। আগামীকাল অভিষেকের সভা অন্যত্র করার নির্দেশ দিক হাইকোর্ট, আবেদন মামলাকারীদের। আবেদনে বলা হয়েছে, আদালতের অনুমতিতে হাজার পাঁচেক DA-আন্দোলনকারী শহিদ মিনারের নীচে ধর্নামঞ্চে রয়েছেন। সেখানে আগামীকাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভায় ৪০-৫০ হাজার লোক হলে, গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে। মামলাকারীদের আইনজীবীর দাবি, DA-মঞ্চের কাছে সভা করলে, সমস্যা হতে পারে। তাই অন্যত্র সভা করার নির্দেশ দিক হাইকোর্ট। মামলা দায়েরের অনুমতি দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সব পক্ষকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। আজই দুপুর ২টোয় শুনানি। 




 



একদিনের বেতন কাটার নির্দেশ: বকেয়া DA-র দাবিতে ১০ মার্চ রাজ্যের সব সরকারি অফিসে ধর্মঘটের ডাক দেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। সেই ধর্মঘট রুখতে কড়া বিবৃতি জারি করে নবান্ন। আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের ধর্মঘট নিয়ে, অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, শুক্রবার অর্থাৎ ১০ মার্চ কোনওভাবেই পূর্ণ বা অর্ধ দিবস ছুটি নেওয়া যাবে না। ধর্মঘটে সামিল হলে কর্মজীবন থেকে বাদ যাবে একদিন। সেইসঙ্গে শোকজ করা হবে। একই মর্মে কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করে কলকাতা পুরসভাও। বকেয়া DA-র দাবিতে গত ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তখনও একই মর্মে কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল নবান্ন। রাজ্য সরকারের সেই হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও বকেয়া DA-র দাবিতে সরকারি অফিসে ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন আন্দোলনরত রাজ্য সরকারি কর্মীরা। ৯ মার্চের সেই নির্দেশিকা মোতাবেক তালিকা দিয়ে একদিনের বেতন কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়।