গৌতম মণ্ডল, আমতলা : আমতলায় বিজেপির অফিস থেকে বেরিয়ে আলতাবেড়িয়া যাওয়ার পথে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে ঘিরে বিক্ষোভ। বিজেপির কেন্দ্রীয় টিমকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপিরই ঘরছাড়াদের একাংশ। ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থীর বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের সঙ্গে দেখা না করেই কেন্দ্রীয় টিম চলে যাচ্ছে, এই অভিযোগে তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।


একনজরে ঘটনা-


এবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ছিলেন অভিজিৎ দাস। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে তাঁর এখানে বেশকিছু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সেই সংখ্যাটা ৭০ থেকে ৮০ জন। এখানে এর আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছেন। কিন্তু, আজকের কর্মসূচি অনুযায়ী বিজেপির কেন্দ্রীয় দল আসে জেলা পার্টি অফিসে। এখানে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। তাঁরা ঘরছাড়া এবং তাঁদের ওপর অত্যাচার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি কর্মীরা।


এরপর কেন্দ্রীয় দল আলতাবেড়িয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। সেই পথেই আমতলায় অভিজিৎ দাসের বাড়ি পড়ে। তাঁর সেখানে যেসব ঘরছাড়া আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা জানতে পারেন তাঁদের কাছে কেন্দ্রীয় দল আসবে না। সেইসময় তাঁরা ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন। তাঁরা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। কনভয় সেই রাস্তায় এলে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়েন বিজেপির পুরুষ ও মহিলা কর্মী-সমর্থকরা। তাঁরা কনভয় আটকানোর চেষ্টা করেন। যদিও পুলিশ থাকায় সেই কনভয় আটকানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় দলে নেতৃত্ব দেওয়া বিপ্লব দেবের গাড়ি আটকে যায়। তাঁকে ঘিরে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা বলেন, আপনি অন্তত ৫ মিনিটের জন্য হলেও এখানে আসুন। কারণ, এখানে প্রচুর ঘরছাড়া মানুষ রয়েছেন। আমরা কী দুঃখের মধ্যে আছি আপনারা সেটা দেখতে আসুন।


কিন্তু, বিপ্লব দেব গাড়ি থেকে নামেননি। তিনি শুধু নাম জেনে নিয়ে এক কর্মীকে আশ্বস্ত করেন। রাজনৈতিক মহল বলছে, এই পরিস্থিতিতে জেলা সভাপতি ও এখানকার বিজেপি প্রার্থীর মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবিটা আরও প্রকট হল।


এদিকে ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য সরকার। বিচারপতি কৌশিক চন্দর ডিভিশন বেঞ্চের ৬ জুনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে জমা পড়ল রিপোর্ট। ৬ জুন কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, রাজ্য পুলিশের DG-কে ই মেল করে অভিযোগ জানাতে পারবেন আক্রান্তরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখে FIR করার নির্দেশ দেয় আদালত। রাজ্য সরকারের জমা দেওয়া রিপোর্টে ৬ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ৫৬০টি অভিযোগ জমা পড়ার উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে ১০৭টি FIR দায়ের হয়েছে, জানিয়েছে রাজ্য সরকার।


রিপোর্টে উল্লেখ, ৯২টি অভিযোগের ক্ষেত্রে ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ পাওয়া যায়নি। ১১৪টি অভিযোগের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান করে কোনও অপরাধ খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং ১৮টি অভিযোগ ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়, রিপোর্টে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। আদালতে দেওয়া রিপোর্টে উল্লেখ, ১৩৮টি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কাজ শেষ হলেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।