রাজপুর-সোনারপুর : আরও একজনের প্রাণ চলে গেল। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২। এবার জমা জলে পড়ে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এক অস্থায়ী কর্মীর মৃত্যু হল। হাইড্রেন পরিষ্কার করতে গিয়ে তলিয়ে যান তিনি। বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশির পরে উদ্ধার করা হয় জয়ন্ত ঘোষ নামে ওই পুরকর্মীর দেহ।
সোমবার রাতের ৪-৫ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে কাল ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয় কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তের। উত্তর থেকে দক্ষিণ, দেখা গেছে তীব্র জল-যন্ত্রণার ছবি। বৃষ্টি থামার পরও জল জমে রয়েছে একাধিক জায়গায়। মঙ্গলবার দুর্যোগের দিনে, জমা জলে ডুবে এবং বিদ্য়ুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্য়ুমিছিল নেমেছে ! এগারোজনের মৃত্য়ুর খবর পাওয়া গেছিল এর আগে। এবার সেই তালিকায় জুড়ল আরও একটা নাম।
এ প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দর সম্পাদক সুমন দে-কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেছিলেন, "আমি CESC-র সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গেও কথা বলেছি। আমি পরিষ্কার সঞ্জীবকে বললাম, সঞ্জীব দেখো তোমাদের বিদ্যুতের লোকেরা কাজকর্ম করছে। তারা কিন্তু তারগুলো ঠিক করে রাখে না। এর আগে হাওড়ায় একটা ঘটনা ঘটেছে। বারবার বলেছি, তোমরা সতর্কতা নাও। কিন্তু, সতর্কভাবে কাজ করছে না। তুমি নিজে মনিটরিং করে দেখো। এভাবে মানুষের প্রাণ না যায়। এটা আমি ওকে বলেছি। যারা মারা গেছে তাদের প্রত্যেকটা পরিবারকে হয় CESC চাকরি দেবে, CESC যদি না দেয়...পুজোর সময়ের ঘটনা...আমরা নিজেরা রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেব। দুই হচ্ছে, সিইএসসি-কেও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমরা রাজ্য সরকারের থেকে তো দুর্যোগে কেউ মারা গেলে সাহায্য করি। মানবিকতার ব্যাপার। একটা জীবন চলে গেলে তার পরিবারটা কী করে চলবে ! সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের আছে। সেটা আমরা দেখে নেব। এতগুলো প্রাণ পুজোর আগে চলে গেল !"
এই ইস্যুতে সুর চড়িয়ে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত দায়ভার সিইএসসি-র উপর ছেড়ে দিতে চাইছেন, সঞ্জীব গোয়েঙ্কার উপর ছেড়ে দিতে চাইছেন...এভাবে দায়িত্ব ছেড়ে পালানো যায় না। বন্যা হলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে জল জমবে এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। সব শহরেই জমে। আমরা তারজন্য এই মুহূর্তে কাউকে দোষারোপ করছি না। বেঙ্গালুরুতেও জল জমে। কিছুদিন আগে হায়দ্রাবাদে জল জমেছিল। কোথাও তো আমরা দেখিনি যে, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মানুষের মৃত্যু ঘটছে। কেন কলকাতায় বারবার হয় ? কলকাতাজুড়ে এই যে অব্যবস্থা ...এরজন্য দায়ী কে ? সঞ্জীব গোয়েঙ্কাদের সঙ্গে সম্পর্ক কারা রাখে ? কারা সঞ্জীব গোয়েঙ্কাদের কাছ থেকে ভোটের সময় টাকা নেয় ? এই প্রশ্নগুলি এখন উঠলে মুখ্যমন্ত্রী জবাব দিতে পারবেন না, পালাবেন।"