সন্দীপ সরকার, পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ। তার মধ্যে কলেরারও হদিশ মিলেছে। এ বার রাজ্যে মশাবাহিত রোগের বাড়বাড়ন্তও নজরে এল। ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ওয়েবসাইটে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, এনসেফ্যালাইটিসে (Encephalitis) আক্রান্তের নিরিখে দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থানে  রয়েছে বাংলা (Encephalitis in West Bengal)। মৃত্যুর নিরিখে রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে বেড়েছে ম্যালেরিয়ার (Malaria) প্রকোপও।


রাজ্যে মশাবাহিত রোগের দাপট


বর্ষায় জমা জল নিয়ে লাগাতার সতর্কতা অভিযান চলছে। তার মধ্যেই চলছে মশাবাহিত রোগের (Mosquito-Borne Diseases) দাপটের কথা উঠে এল। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, এনসেফ্যালাইটিসের মতো মশাবাহিত রোগের দাপট রাজ্যে কী ভাবে জাল বিস্তার করছে, উঠে এল সরকারি পরিসংখ্যানে। সেই অনুযায়ী, চলতি বছর জুন মাস পর্যন্ত রাজ্যে অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্তের নিরিখে দেশে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। প্রথম স্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। ঝাড়খণ্ড রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।


এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যুর নিরিখে দেশে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা। প্রথম স্থানে রয়েছে অসম। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "কলকাতার থেকে জেলায় ডেঙ্গির প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। ওখানে ড্রেনেজ সিস্টেম সেভাবে নেই। কেএমডিএ লাগোয়া জেলায় নজরদারির জন্য বলেছি।"


আরও পড়ুন: Cholera In Kolkata : করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেই শহরে আরেক ভয়াবহ রোগ


চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিউলেক্স মশার কামড়ে হওয়া এনসেফ্যালাইটিসে জ্বরের সঙ্গে স্নায়বিক সমস্যা তৈরি হয়। তার জেরে অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। ভুল বকা, খিঁচুনি, স্মৃতিভ্রংশ, কথা বন্ধ, হাত-পা অসাড় এবং আচ্ছন্ন ভাবের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। চিকিৎসক কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, "অনেক ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। আমরা যখন চিহ্নিত করতে পারি না তখন অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোম বলি। চিহ্নিত হলে তখন বলি জাপানি এনসেফ্যালাইটিস বা অন্য কিছু।"


ম্যালেরিয়া, এনসেফালাইটিসের বাড়বাড়ন্ত


একই ভাবে, ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ওয়েবসাইটে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, ম্যালেরিয়ার প্রকোপও বেড়েছে বাংলায়। গত এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে সাধারণ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার জনের বেশি, মোট ১ হাজার ৬০১ জন। প্রাণঘাতী ফ্যালসিফেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৯।  সাধারণ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের নিরিখে দেশে ৬ নম্বরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। চিকিৎসক শুদ্ধসত্ত্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ম্যালেরিয়া মোকাবিলায় যে কাজ করা হত, ২ বছরে তা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। এটা তারই ফলশ্রুতি।" প্রশাসন কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়, সেদিকেই তাকিয়ে চিকিৎসক মহল।