কলকাতা:  এক কোটি, দু'কোটি বা ১ হাজার কোটিও নয়, রেশনে মোট ১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে এবার আদালতে দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ED-র দাবি, ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দুবাইয়ে পাচার করা হয়েছে। শঙ্কর আঢ্যর সংস্থার মাধ্যমেই ওই বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করা হয় বলে দাবি ED-র। রেশন দুর্নীতিতে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠি থেকেই শঙ্করের নাম সামনে আসে বলে জানিয়েছে ED. (Ration Scam)


১৭ ঘণ্টা ধরে তল্লাশির পর শুক্রবার শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করে ইডি। তার পর শনিবার তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সেখানে ED জানায়, এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নী হয়েছে রেশনে। আগামী দিনে টাকার অঙ্ক আরও বাড়তে পারে। এর আগে, বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করার পরই ED জানায়, ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। পরে তা বেড়ে ১০০, তার পর ১০০০ এবং শনিবার সেই অঙ্ক আরও বেড়ে ১০ হাজার কোটি হয়েছে বলে দাবি ED-র। (Kolkata News)


শঙ্করকে কেন গ্রেফতার করা হল, এদিন আদালতে চানতে চান বিচারক। জবাব ED জানায়, শঙ্করের সঙ্গে সংযুক্ত ৯০টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার হদিশ পাওয়া গিয়েছে। ওই সব সংস্থার মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিময় করে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এই সব সংস্থা সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত, সেখানকার দরিদ্র মানুষের নামে মুদ্রার লেনদেন হতো। ওই টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি বিদেশে পাঠানো হয়েছে। যে টাকা বিদেশি যাচ্ছে, সেই টাকায় দেশবিরোধী কাজ কর্ম হচ্ছে না, তার কী গ্যারান্টি, এ দিন আদালতে এই প্রশ্নও তোলে ED. 


আরও পড়ুন: মহিলাদের সামনে রেখে বিক্ষোভ, উড়ে এল ইট, ভাঙল কাচ, শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করতে গিয়ে ফের আক্রান্ত ED


ED-র মুখে ২০ হাজার কোটি পাচারের কথা শুনে, বিচারক বলেন, "এর পরও আমরা বলি, আমাদের রাজ্য গরিব? আমরা গরিব রাজ্যে থাকি?" ED-র দাবি, SSKM হাসপাতাল থেকে শঙ্করের নাম পাওয়া যায়। যেদিন হাসপাতালে জ্যোতিপ্রিয়ের কেবিন থেকে সিসিটিভি ফুটেজ তুলে নেওয়া হয়, তার পরই মেয়ে দেখা করতে যান জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে। জ্যোতিপ্রিয়ের মেয়ের থেকে ওই চিঠি উদ্ধার করা হয়। সেই চিঠি লিখেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। এদিন আদালতে এই চিঠি তুলে ধরা হয়। ED-র দাবি, কার কাছ থেকে কত টাকা নিতে হবে, কাকে কত টাকা দিতে হবে, তা লেখা ছিল ওই চিঠিতে। সেই চিঠি থেকেই শঙ্করের নামের উল্লেখ মেলে বসে দাবি করে ED. 


এই রাজ্যে অফিসাররা কাজ করতে পারছেন না বলেও এদিন আদালতে দাবি করে ED. গতকালের মারধরের কথাও উল্লেখ করা হয়। হাসপাতালে বসেও জ্যোতিপ্রিয় প্রভাব খাটাচ্ছেন বলে দাবি করে ED. ED-র আইনজীবী সন্দেশখালিতে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।  কী লুকনোর চেষ্টা হচ্ছে, তোলা হয় প্রশ্ন। যদিও শঙ্করের আইনজীবী জানান, আইন মেনে গ্রেফতার করা হয়নি তাঁর মক্কেলকে। এদিন ED আরও জানিয়েছে, একা বাকিবুরের থেকে ই ১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির হদিশ মেলে। এমন আরও অনেক রেশন ডিলার রয়েছেন, তাঁদের সকলের নাগাল পাওয়া গেলে, দুর্নীতির অঙ্ক আরও বাড়বে।