আবির দত্ত, কলকাতা : এক ভোটার, অথচ ভোটার তালিকায় দু-জায়গায় নাম। তাও আবার একই বুথে। ভোটারের নাম ও তাঁদের বাবার নামও এক। শুধু এপিক নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর আলাদা। কলকাতার পাটুলিতে এমনই দুই ব্যক্তির হদিশ পাওয়া গেল। একজন বিশ্বজিৎ মণ্ডল, অন্যজন আশিস রায়। তাঁদের দাবি, তাঁরা দীর্ঘদিনের ভোটার। কিন্তু এবার বাড়ি BLO পৌঁছনোর পর বিষয়টি জানতে পেরেছেন। ভোটার তালিকায় তাঁদের দু-জায়গায় নাম রয়েছে। বাবার নামও এক। এই ঘটনা সামনে আসতে আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। যদিও তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।
২০১৭ সাল থেকে এই ব্যক্তি ভোটার হয়েছেন। ৮ বছর পর ২০২৫ সালে তিনি জানতে পেরেছেন তাঁর নাম, ঠিকানা, বাবার নামে আরও এক জায়গায় নাম রয়েছে। এর থেকে ওই ব্যক্তি মনে করছেন যে আরও একটি ভোটার কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। যেহেতু এপিক নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর আলাদা, তাই আরও একটি ভোটার কার্ড রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিএলও বাড়িতে এনুমারেশন ফর্ম দিতে এলে সবটা জানা গিয়েছে। এতদিন জানতেই পারেননি। একই নামে দুটো ভোটার কার্ড, স্বভাবতই আতঙ্কে ওই ব্যক্তি। আরও একজনের সঙ্গেও ঘটেছে একই ধরনের ঘটনা। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন এই ব্যক্তিরা। বিজেপির তরফে অভিযোগ দিনের পর দিন শাসকদলের মদতেই এমনটা হয়েছে। এলাকার কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, তিনি অসুস্থ। বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলেছেন তিনি।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটিতেও এমনই এক ঘটনার খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল
বিরাটির বাসিন্দা এক ভোটারের নাম রয়েছে ৪ জায়গার ভোটার তালিকায়। ওই মহিলার অভিযোগ, নাম বাদ দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করেও সুরাহা হয়নি। এই নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন তিনি। সাম্প্রতিক SIR প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধানের আশায় রয়েছে গৃহবধূর পরিবার। ভোটার এক জন, অথচ তাঁরই নাম রয়েছে ৪ জায়গার ভোটার তালিকায়। ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন ঘিরে রাজ্য জুড়ে যখন তোলপাড় চলছে, তখনই সামনে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটির এই ঘটনা।
মহিলার নাম পিয়ালি দেব। বর্তমানে বিরাটির বাসিন্দা এই গহবধূ। ২০০২-এর ভোটার তালিকায়, বধূর নাম রয়েছে তার বাবার বাড়ির ঠিকানা বিরাটির নীলাচলে। যেখানে পিয়ালি দেবের অভিভাবক হিসাবে রয়েছে বাবা নির্মলেন্দু দাসের নাম। এরপর বিরাটির স্বামীজি পল্লির বাসিন্দা অভিজিৎ দেবকে বিয়ে করেন পিয়ালি। ফলে সেখানকার ভোটার লিস্টে নতুন করে নাম ওঠে পিয়ালি দেবের। কয়েক বছর পর স্বামী অভিজিৎ দেব মারা যান। তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন মহেশতলার আক্রার বাসিন্দা তন্ময় দেবকে। ফলে সেখানেও তার নাম ভোটার লিস্টে উঠে যায়। বর্তমানে মহেশতলার আক্রা ছেড়ে বিরাটিতে থাকেন পিয়ালি ও তাঁর স্বামী। যথারীতি সেখানেও পিয়ালির নাম ভোটার তালিকায় উঠে যায়।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় নাম বাদ দেওয়ার জন্য ৭ নম্বর ফর্ম পূরণ করতে হবে। নিজের নাম অন্য জায়গায় ট্রান্সফার করাতে হলেও একাধিক নথি জমা দিতে হয়। বছর চুয়াল্লিশের পিয়ালি দেবের দাবি, ৩ জায়গা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য নির্ধারিত ৭ নম্বর ফর্ম ফিল আপ করেছেন। কিন্তু নাম কাটা হয়নি।