অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা : জ্বলছে মোমবাতি। একাধিক পোস্টার, ফেস্টুনে ঢেকেছে এলাকা। সবেতেই উল্লেখ একটি সংখ্যার। ৬০০। গ্রীষ্ণ-বর্ষা পেরিয়ে শীত। আজ ৬০০ তম দিনে পড়ল ২০১৬ সালের এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান আন্দোলন। মেয়ো রোডে গাঁধীমূর্তির নিচে দীর্ঘদিন ধরে চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে অবস্থান আন্দোলন চালাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
এসএলএসটি নবম থেকে দ্বাদশের নিয়োগের দাবিতে অবস্থান-আন্দোলনের পাশাপাশি প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে কীভাবে হবে সমস্যার সমাধান, কীভাবে কাটবে নিয়োগ-জট তা নিয়ে সমাধানসূত্র এখনও অধরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিশ্রুতি, সমাজের স্তরের বিভিন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছাড়া এখনও প্রাপ্তি শূন্য। নিজেদের দাবিকে আরও জোরালো করার দাবিই অবস্থান আন্দোলনের ৬০০ তম দিনে তুললেন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের ভাষায় যা 'বঞ্চনার ৬০০ দিন'।
কী বলছেন আন্দোলনকারীরা
স্লোগানে, প্রতিবাদে নিজেদের দাবি আরও জোরালোভাবে পেশ করার জন্যই চোয়াল শক্ত করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলনকারীদের অন্যতম শহিদুল্লাহ বলেছেন, 'আজ আর আমাদের আন্দোলন গাঁধী মূর্তির চৌহদ্দির মধ্যে আটকে নেই। এক অসম লড়াই শুরু করেছিলাম আমরা। হাতে গোনা কয়েকজন মিলে একটা অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিলাম। আর এখন গোটা বাংলা, গোটা ভারত জুড়ে আন্দোলনের আবেগ পৌঁছে গিয়েছে। আন্দোলনের যৌক্তিক ভিত্তি প্রতিষ্টিত হয়েছে। ৬০০ দিনের মাথায় আমাদের একটাই প্রত্যাশা, আর বেশিদিন হয়তো বসে থাকতে হবে না। কারণ, বাংলার সকল মানুষ আওয়াজ তুলছেন, তাঁরাও একসুরে বলছেন এই অন্যায় আমরা মেনে নেব না। আজ বাংলার সমস্ত শ্রেণির মানুষ আমাদের নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন। এই অবস্থায় কর্মকর্তাদের যতই বিরূপ মনোভাব থাক, সেটা সরিয়ে নিয়োগ দিতে তাঁরা বাধ্য হবেন। '
প্রসঙ্গত, দিন তিনেক আগেই পরীক্ষার জন্য নতুন বিজ্ঞপ্তির দাবিতে সল্টলেকের করুণাময়ীতে SLST চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধমার বেঁধেছিল। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলনকারীদের আটক করে পুলিশ। টেনে-হিঁচড়ে তোলা হয় পুলিশের গাড়িতে।SLST চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ৬ বছর ধরে কোনও পরীক্ষা হয়নি। তাই নতুন করে পরীক্ষার নেওয়ার দাবিতে এদিন SSC ভবন অভিযানের ডাক দেন চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলনকারীরা করুণাময়ীতে জড়ো হতেই তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বলে পুলিশের দাবি।