রুমা পাল, কলকাতা: শব্দ দূষণ ঠেকাতে রাজ্য সরকার ব্যর্থ। রাজ্য সরকারের ভূমিকায় এভাবেই অসন্তোষ প্রকাশ গ্রিন ট্রাইব্যুনাল-এর। শব্দ দূষণ রোধ করতে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে মামলা রুজু করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। এর ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাজ্যকে আদালত প্রশ্ন করে বলে, শব্দ দূষণ ঠেকাতে শুধু সার্কুলার আর কমিটি গঠন করলে চলবে না। শব্দ দূষণ রোধ করতে কি ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার তা জানতে চাইল আদালত।



বৃহস্পতিবার আদালতে বিচারপতি বি অমিত স্থালেকার এবং বিচারপতি শৈবাল দাশগুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শব্দ দূষণ ঠেকাতে রাজ্য সরকার কী  কি কাজ করেছে, কত জরিমানা করা হয়েছে, কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কটি যানবাহন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। এছাড়াও কেন্দ্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কলকাতার সমস্ত জায়গার শব্দমাত্রা কত তার রিপোর্টও দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।


এমনকি সাইলেন্সের জন্য কত শব্দ মাত্রা রয়েছে তারও রিপোর্ট জমা দিতে হবে গ্রিন ট্রাইব্যুনালকে। এর আগে ২০২০ তে গ্রিন ট্রাইবুনাল নির্দেশ দেয় মাইক বাজানোর ক্ষেত্রে শব্দের সীমা নির্দিষ্টভাবে ব্যবহার করতে হবে। অন্যান্য গাড়ির হর্নের ক্ষেত্রে শব্দ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ করবে রাজ্য সরকার কিন্তু এই রায় বাস্তবায়িত করতে পারেনি, এমনটাই বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই মামলারই শুনানি ছিল। কিন্তু এই রায় এখনও বাস্তবায়িত না হওয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত।


আদালতের বিচারপতির প্রশ্ন উত্তরপ্রদেশের গোমতীতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মোটরবাইকের শব্দের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে তাহলে এ রাজ্য কেন পারবে না? গত বছরও কেন্দ্রের তথ্য তালিকায় এসএসকেএম এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন ‘সাইলেন্স জোন’ এলাকায় নির্ধারিত শব্দমাত্রা (দিনে ৫০ ও রাতে ৪০ ডেসিবেল) ধারাবাহিক ভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ওই দুই এলাকায় রাতে শব্দমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৬০ ও ৪১, ৭১ ও ৬০ এবং ৭০ ও ৬২ ডেসিবেল। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি, হায়দরাবাদ, লখনউ, কলকাতা ও মুম্বই শহরের শিল্প, বাণিজ্যিক, বসতি এবং শব্দহীন এলাকার তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শব্দ শাসনের নিরিখে কলকাতা প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রথম সারিতে রয়েছে।