অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: ওন্দায় মালগাড়ি দুর্ঘটনায় লোকো পাইলট, অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট এবং দু'জন চিফ লোকো ইন্সপেক্টরকে সাসপেন্ড করল রেল। চালকদের প্রশিক্ষণেই গাফিলতি ছিল? চিফ লোকো ইন্সপেক্টরদের সাসপেন্ডের পর উঠছে প্রশ্ন।


সাসপেন্ড একাধিক রেলকর্মী:
বাঁকুড়ার ওন্দায় মালগাড়ি দুর্ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করল রেল। সাসপেন্ড করা হল মালগাড়ির লোকো পাইলট, অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট এবং দু'জন CLI বা চিফ লোকো ইন্সপেক্টরকে।   


রবিবার ভোর ৪টে ৫ মিনিটে, ওন্দায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। রেল সূত্রে খবর, লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে বাঁকুড়ার দিক থেকে আসা আরেকটি মালগাড়ি। পিছনের মালগাড়িটির ইঞ্জিন উঠে যায় দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির ওপর। দু'টি ট্রেনের ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। 


দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, চালকের গাফিলতিতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর আগে রেলের তরফেও এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। দুর্ঘটনার পরে সেদিনই আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম মণীশ কুমার বলেছিলেন, 'সিগন্যাল রেড ছিল। চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'


তবে লোকো পাইলট ও অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলটের সঙ্গে দু-জন চিফ লোকো ইন্সপেক্টরকে সাসপেন্ড করা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে। ট্রেনের চালকদের প্রশিক্ষণ দেন, CLI বা চিফ লোকো ইন্সপেক্টর। সাম্প্রতিক অতীতে কোনও রেল দুর্ঘটনায় তাঁদের সাসপেন্ড করার উদাহরণ নেই। তাহলে কি ট্রেন চালানোর প্রশিক্ষণেই কোনও গাফিলতি ছিল বলে মনে করা হচ্ছে? সেই প্রশ্ন উঠছে। রবিবারের দুর্ঘটনা উস্কে দিয়েছে দোসরা জুনের করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বিপর্যয়ের স্মৃতি। ওই দুর্ঘটনার তদন্তভার CBI-কে দেওয়া হলেও, এখনও পর্যন্ত কাউকে সাসপেন্ড করা হয়নি।


কয়েকদিন আগেই ওড়িশার বালেশ্বরে করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ক্ষত এখনও তাজা। মারা গিয়েছিলেন প্রায় ৩০০ যাত্রী। আহত হাজারেরও বেশি। লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মেরেছিল যাত্রিবাহী ট্রেন। ওই দুর্ঘটনা নিয়ে এখন সিবিআই তদন্ত চলছে। মেন লাইনের সিগন্যাল থাকলেও কীভাবে লুপ লাইনে এসে ঢুকেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস - তা নিয়ে এখন বিস্তর কাঁটাছেঁড়া চলছে। গাফিলতি থেকে ষড়যন্ত্র- একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে। সেই আবহেই এবার বাঁকুড়ার ওন্দাতেও প্রায় একই ঘটনা ঘটল। একটি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও সেখানে এসে পড়ল অন্য একটি মালগাড়ি। সংঘর্ষও হল। মালগাড়ি বলে হয়তো সেই অর্থে প্রাণহানি হয়নি, তবে ক্ষতি হয়েছে রেলের সম্পত্তির। যা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।


আরও পড়ুন: কতবার দুধ ফোটান? পদ্ধতি কি ঠিক? পুষ্টিগুণ নষ্ট হচ্ছে না তো?