উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, সুমন ঘড়াই ও ঝিলম করঞ্জাই, সাগরদিঘি : সাগরদিঘিতে (Sagardidhi Assembly) প্রায় ৬৭ শতাংশ ভোটার সংখ্যালঘু ! আর সেখানেই উপনির্বাচনে (By-Election) তৃণমূলকে (TMC) হারিয়ে দিল বাম-কংগ্রেসের জোট (Left-Congress Alliance) ! যার পর প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ? এ নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। 


তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাল সাগরদিঘি 


২০১১, ২০১৬, ২০২১ পরপর তিনবার তৃণমূলের প্রার্থীকে বিধানসভায় পাঠানো, সাগরদিঘির মানুষ, আজ মুখ ফিরিয়ে নিল তৃণমূলের থেকে। যা পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের আগে, অত্য়ন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। কারণ, সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৬৮ শতাংশই সংখ্যালঘু ভোটার। বামেদের সমর্থনে, সেই কেন্দ্র উপনির্বাচনে তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস ।


শেষ বিধানসভা ভোটে সাগরদিঘিতে যেখানে তৃণমূল প্রার্থী ৫১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন, তা উপনির্বাচনে ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১১ থেকে প্রায় সব নির্বাচনেই সংখ্য়ালঘু ভোটব্য়াঙ্কে কার্যত একাধিপত্ব ছিল তৃণমূলের। তাহলে সাগরদিঘিতে হঠাৎ এমন ফল কেন ? বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, সংখ্যালঘুরা কি তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাচ্ছে ?


কী কী কারণ উঠে আসছে সামনে


পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ছাত্রনেতা আনিস খানের রহস্য়মৃত্য়ু। বগটুইয়ে সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের ১০ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ। আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে ৪০ দিন জেলে আটকে রাখার মতো ঘটনায় রাজ্য় রাজনীতিতে যথেষ্ট সাড়া পড়েছে। সংখ্য়ালঘু অধ্য়ুষিত সাগরদিঘির ভোটে সেগুলোই ফ্য়াক্টর হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকে। বাম সমর্থিক কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস জেতার পরই যে প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর খোঁচা, 'মুসলমানদের সঙ্গে গদ্দারি করেছে মমতা। একবার বোকা বানানো যায়। কিন্তু বারবার বোকা বানানো যায় না'। ফলাফল দলের বিরুদ্ধে গেলেও যা বিষয় খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমি সংখ্যালঘুদের সমর্থন পাই, এসব বলতে রাজি নই। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, সবাইকে বিশ্বাস করি, সবাই আমাকে ভালবাসে, আমিও ভালবাসি।'


একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল-বিজেপি বাদে, একমাত্র ভাঙড় কেন্দ্র জয়ী হন ISF -এর নৌশাদ সিদ্দিকি (Nawsad Siddique)। ভাঙড়েও প্রায় ৬৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটার। তাযপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সংখ্য়ালঘু অধ্য়ুষিত সাগরদিঘিতে জিতে কংগ্রেস যেদিন বিধানসভায় এন্ট্রি পাকা করল, সেদিনই জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরোলেন আরেক বিরোধী বিধায়ক, আইএসএফের  নৌশাদ সিদ্দিকি। ৪০ দিন জেলে থাকার পর এদিনই তাঁর জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।


আরও পড়ুন- জোট হবে মানুষের সঙ্গে, '২৪-এ কারও হাত ধরবে না তৃণমূল, জানিয়ে দিলেন মমতা