ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, রাজীব চৌধুরী, কলকাতা : পুজোতে ঠাকুর দেখায় তেমন বিঘ্ন ঘটাবে না বৃষ্টি। চতুর্থীর দিন সুখবর দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। পুজোর ক'দিন রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।


রোদ ঝলমলে নীল আকাশ জুড়ে পেঁজা তুলোর মতো মেঘের আনাগোনা জানান দেয় শরৎকাল এসে গেছে। উমাকে বাপের বাড়িতে স্বাগত জানাতে সেজে উঠেছে প্রকৃতিও। কিন্তু সেই আকাশেই মাঝে মাঝে কালো মেঘের ঘনঘটা আর যখন তখন বৃষ্টি, বাঙালির মনে ভয় ধরাচ্ছে। কী হবে পুজোয় ?
অবশেষে মিলল সুখবর। পুজোতে রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব কম। শুক্র ও শনিবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।বৃষ্টির সম্ভাবনা কমার পাশপাশি আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় বাড়বে অস্বস্তিও। তাই বৃষ্টির জন্য না হলেও রোদের হাত থেকে বাঁচতে ছাতা নিয়েই ঠাকুর দেখতে বেরোতে হবে রাজ্যবাসীকে।

একদিকে যখন উৎসবের আবহ, অন্যদিকে তখন ভাঙনের করাল ছায়া গ্রাস করেছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের উত্তর চাচণ্ড গ্রামকে। তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক বাড়ি। তলিয়ে যাচ্ছে আস্ত গাছ।


সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা রোনেশা খাতুন বলেন, "বাচ্চাগুলো ঘুমিয়ে ছিল। কোনও রকমে ওদের বের করেছি। কিছু টানতেও পারিনি। জামা-কাপড় বা যা কিছু ছিল...। আতঙ্কে কিছুই হয়নি। সবকিছু তলিয়ে গেছে।"

পুজোর মুখে সব হারিয়ে পথে বসেছেন বাসিন্দারা। অপর এক বাসিন্দা বকুল রবি দাস বলেন, "আমরা সারা রাত ঘুমাতে পারিনি কেউ। এখানে প্রায় ১২-১৩টা ঘর পড়ে গেছে। এখন অবধি সারা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। মেম্বার আসছে...দেখেশুনে যাচ্ছে। কিছু নিরাপত্তা নেই আমাদের।"

রাত কাটছে খোলা আকাশের নীচে। চূড়ান্ত সমস্যায় বয়স্ক মানুষ, অসুস্থ ও শিশুরা। সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বলেন, "যেখানে ভাঙন শুরু হয়েছে সেখানেও ১৫ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। কাজটা এখনও শেষ হয়নি। জল নামলেই সেখানে কাজ শুরু হবে। ধূলিয়ান থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকায় ১০০ কোটি টাকার কাজ চলছে। এটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাদ্দ করেছিলেন। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার ১০ পয়সাও এখানে বরাদ্দ করেনি।"


পাল্টা সুর চড়িয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীষ তিনি বলেন, "আপনারা বলছেন ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, কোথায় ১০০ কোটি ? কোথায় সেই টেন্ডার, কারা পেয়েছে টেন্ডার ? সেই টেন্ডার অনুযায়ী কী কাজ হচ্ছে ? মানুষকে দেখান। টেন্ডার টেন্ডারের মতো হয়। সে টাকা তো নেতাদের ঘরে যাবে। কাটমানি রোজগার করবে। কিন্তু, ভাঙন ঠেকাবে কে ?" 

আর ক'দিন পরেই আলোয় আলোয় সাজবে শহর থেকে গ্রাম। তার আগেই মাথার ছাদটুকুও হারিয়ে গেল এই মানুষগুলোর। প্রশাসনের গাফিলতির জন্যই ফি বছর সব হারাতে হয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের।