মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: করোনা থাবা বসিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের (West Burdwan) দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালেও। বেশ কয়েকজন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হলেও, এখনও পর্যন্ত পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেছেন সুপার। এদিকে, আধারের সঙ্গে মোবাইল ফোনের নম্বর সংযুক্তিকরণের জন্য একটি ব্যাঙ্কের সামনে দেখা গেল থিকথিকে ভিড়।
সময় যত যাচ্ছে, ততই সংক্রমিত হচ্ছেন মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রথম সারির যোদ্ধারা! রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের ছবিটাই এক।
গত এক সপ্তাহে পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট ১৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালেই সংখ্যাটা ২০। করোনা হানা দিলেও এখানে এখনও পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবায় কোনও প্রভাব পড়ছে না, বলেই দাবি করেছেন সুপার।
যখন দাপট দেখাচ্ছে করোনা, তখন আঁতকে ওঠার মতো এই ছবি দেখা গেল দুর্গাপুর শহরেই!বেনাচিতি বাজার এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে দেখা যায়, মানুষের ভিড়। কেউ এসেছেন আধার কার্ডের সঙ্গে মোবাইল ফোনের নম্বর সংযুক্ত করতে।
তো কেউ এসেছেন আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণের জন্য। আর এতেই ঘুচেছে যাবতীয় করোনা-বিধি। বেশ কিছুক্ষণ পরে পুলিশ এসে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস, ওমিক্রন। আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। একই ঘটনা এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালেও। মাত্র তিনদিনেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের আটজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হলেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীও ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে গত তিনদিনে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ১৬ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। এইভাবে চলতে থাকলে অচিরেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য ভবনেও (Swathabhawan) করোনার হানা (Corona), ৬৬ জন আক্রান্ত। স্বাস্থ্য ভবনের ৬৬ জন কর্মীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ (Corona Positive) এসেছে সম্প্রতি। ১৩৭ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছিল কল্যাণীতে (Kalyani) তাঁদের মধ্যে ৬৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
করোনা, ওমিক্রন আবহে কলকাতায় স্বাস্থ্য পরিষেবায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে হাসপাতালে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন চিকিৎসকরা। এনআরএসে ৭০ জন চিকিত্সক-নার্সের করোনা। যার জন্য গোটা হাসপাতাল জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এনআরএসে ১০ জন ইন্টার্ন ও চিকিত্সক, নার্স মিলিয়ে ৭০ জন করোনা আক্রান্ত।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যের একমাত্র সরকারি চক্ষু হাসপাতাল রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি-তে আক্রান্ত ১২ জন চিকিত্সক। ন্যাশনাল মেডিক্যালে জুনিয়র চিকিত্সক ও চিকিত্সক মিলিয়ে প্রায় ৮০ জন আক্রান্ত। আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে আক্রান্ত চিকিত্সকের সংখ্যা ৩০-এর বেশি। চিত্তরঞ্জন সেবাসদনে আক্রান্ত চিকিত্সকের সংখ্যা প্রায় ৩৬।