মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে প্রসুতি মৃত্যুর অভিযোগ দুর্গাপুরে। অভিযুক্ত চিকিসকের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের। আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে মৃতার ময়না তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে এলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম। সুবিচার না পেলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছে প্রসূতির পরিবার। 


অভিযোগের তীর বেসরকার এক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। দুর্গাপুরের এই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসকের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের। লিখিত অভিযোগ দায়ের হল দুর্গাপুরের মহকুমা শাসকের কাছে। সুবিচার না পেলে অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবী জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানালেন মৃতার পরিবার। গত ২৬শে সেপ্টেম্বর দুর্গাপুরের কাঁকসার পানাগড়ে বেসরকারী এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় দুর্গাপুরের কুড়ুরিয়া ডাঙার বাসিন্দা ৩৫ বছরের মধুমিতা নায়েককে। সেই দিনই রাতে মধুমিতার কন্যা সন্তান হয়। এরপর থেকে এই প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অভিযোগ বারবার বলা সত্ত্বেও সেই নার্সিংহোমের চিকিৎসক অশোক গোস্বামী বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। ৩০ তারিখ পর্যন্ত এই নার্সিংহোমেই চিকিৎসাধীন ছিলেন মধুমিতা নায়েক। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে প্রতিদিন।


অভিযোগ অবস্থা বেগতিক বুঝে চিকিৎসক অশোক গোস্বামী মধুমিতাকে সুস্থ আছে বলে পরিবারের লোককে জানিয়ে দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেন নার্সিংহোম থেকে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মধুমিতা নায়েককে নিয়ে যাওয়া হয় সিটি সেন্টারে বেসরকারী এক হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। কোলের সন্তান রেখে বাইশ তারিখ দুপুরে মৃত্যু হয় মধুমিতার। স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য পানাগড় এর বেসরকারি সেই নার্সিংহোমের চিকিৎসককে দায়ী করে মধুমিতার স্বামী জানান, অবিলম্বে এই চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে, দুর্গাপুর থানায় অভিযুক্ত চিকিৎসক অশোক গোস্বামীর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসককেও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।


মধুমিতার আত্মীয় ও পাড়া পড়শিরা জানিয়ে দিয়েছেন যদি অভিযুক্ত চিকিৎসক অশোক গোস্বামীর শাস্তি না হয় তাহলে প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা। এইদিকে থানায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মধুমিতা নায়েকের ময়না তদন্তের জন্য আসানসোল থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভজ্যোতি রায়ের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিমকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডক্টর ধীমান মন্ডল জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর পুলিশ তার নিজের মতো করে তদন্ত করবে।