মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: ফের পুলিশের (West Bengal Police) মানবিক মুখ দেখল পশ্চিমবঙ্গ। এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর (Madhyamik Examinee) অ্যাডমিট কার্ড (Madhyamik Admit Card) নিয়ে এসে তাকে পরীক্ষার হলে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন কাঁকসা থানার পুলিশের অন্তর্গত এক সিভিক ভলেন্টিয়ার (Civic Volunteer)।
বুধবার ছিল মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা। এবছর কাঁকসা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের সিট পড়েছে পানাগড় বাজার হিন্দি হাই স্কুলে।
সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ কাঁকসা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষার হলে বসতে গিয়ে লক্ষী বাউরি নামের এক ছাত্রী লক্ষ্য করে, ভুলবশত সে তাঁর অ্যাডমিট কার্ডটি বাড়িতেই ছেড়ে এসেছে।
পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পারায় অবশেষে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় ওই ছাত্রী। ওই ছাত্রীকে কান্নাকাটি করতে দেখে ছুটে যান কাঁকসা থানার এএসআই বিশ্বজিৎ বারিক। তিনি বিষয়টি জানার পরেই কাঁকসা থানার সিভিক ভলেন্টিয়ার পবন দাসকে ডাকেন এবং দ্রুত ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার ছুটে গিয়ে এক মুহূর্ত দেরি না করে ওই ছাত্রীকে নিজের মোটরসাইকেলে চাপিয়ে সোজা রওনা দেয় তাঁর বাড়িতে কাঁকসার মোল্লাপাড়ায়। পরীক্ষার শুরুর আনুমানিক ১৫ মিনিট আগে অ্যাডমিট কার্ড-সহ ওই পরীক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করান। কাঁকসা থানার পুলিশ কর্মীদের ও সিভিক ভলেন্টিয়ারের এই কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কাঁকসার এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়াল। তিনি ওই সিভিক ভলেনটিয়ার পবন দাস ও কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী বিশ্বজিৎ বারিকের সঙ্গে কথা বলে স্কুলে আর কোনও সমস্যা আছে কিনা তাঁর খোঁজ নেন। তিনি জানিয়েছেন, নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা চলছে। এবং সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে পুলিশ ও সিভিক ভলেনটিয়ারেরা সর্বদা সতর্ক রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের যে কোনও সমস্যায় তাঁরা পাশে থাকবেন এবং নিজের দায়িত্ব পালন করবেন।
আরও পড়ুন, 'সরকারি চাকরি' দেওয়ার নামে প্রতারণা, পুলিশের জালে 'চক্র'
সম্প্রতি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর দিকে একাধিকবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। রাজ্যে চলছে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam)। সেই পরিস্থিতিতে একাধিক ঘটনায় উঠে এসেছে পুলিশের মানবিক মুখ। আরজি কর রোডে ডিউটি করছিলেন শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের অ্যাডিশনাল ওসি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এমএন গাঙ্গুলি রোড মোড়ের কাছে হঠাৎ তাঁর নজরে পড়ে, স্কুল ইউনিফর্ম পরা একটি মেয়ে কাঁদছে। দেখেই বুঝতে পারেন, কোন বিপদে পড়েছে মেয়েটি। জিজ্ঞেস করলে মেয়েটি জানায় বাড়িতে অ্যাডমিট কার্ড ফেলে এসেছে। এখন আর ফিরে গিয়ে নিয়ে আসার সময়ও নেই।আর দেরি না করে, তখনই আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে গাড়িতে বসিয়ে ঘোষ বাগান লেনে তার বাড়িতে নিয়ে যান পার্থ। অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে পরীক্ষার্থীকে পৌঁছে দেন মিল্ক কলোনির শ্রী রামকৃষ্ণ সারদা সঙ্ঘে, ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্রে।