সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর : দিনে দুপুরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শাসানি। তারপরই গলা চেপে ধরে হুমকি। তারপর সপাটে চড়। ফের প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতার দাদাগিরি। তোলা না দেওয়ায়, ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়। রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ব্যবসায়ীকে তৃণমূল নেতার মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যে ভিডিওতে হুমকি দিতে দেখা যাচ্ছে, মকরামপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত শীটকে। আর যাঁকে মারধর করা হচ্ছে, তিনি ডেকরেটর ব্যবসায়ী শ্রীকৃষ্ণ পাল।
ঠিক কী অভিযোগ
আক্রান্ত ব্যবসায়ীর পরিবারের অভিযোগ, শনিবার মোটরবাইকে করে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী। রাজ্য সড়কে তাঁর বাইক আটকে, হুমকি দেন তৃণমূল নেতা। শুধু হুমকিতেই থেমে থাকেননি, এরপর মারধরও করা হয় তাঁকে। এমনকী থানায় অভিযোগ জানানোয়, ব্যবসায়ীর মেয়েকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগকারীর পরিবারের দাবি, এই প্রথম নয়, আগেও একাধিকবার হুমকি, শাসানি দিয়ে জরিমানা আদায় করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। একসময় টাকা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীর বাইক আটকে রেখে দেওয়ারও অভিযোগও করছেন তাঁরা। অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর মেয়ে শম্পা পাল বলেছেন, 'মাঝে মধ্যেই জরিমানা চাওয়া হয়, আগেও না দেওয়ায় বাইক আটকে রেখেছিল। পুলিশকে বলে বাইক ছাড়িয়ে নিয়ে গেছিলাম, শনিবার বাবাকে রাস্তায় মারধর করে।'
প্রথমে অস্বীকার, পরে পাল্টা গালিগালাজের অভিযোগ
হুমকি মারধরের অভিযোগ প্রথমে অস্বীকার করেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা। তবে মারধরের ভিডিও দেখার পরই, সুর বদলান তৃণমূল নেতা। মারধরের কথা স্বীকার করে নিলেও, ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও গালিগালাজের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মকরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত শীট বলেছেন, 'খুব বাজে ভাষায় গালিগালাজ করছিল, যেগুলো কারোর সামনে বলা পর্যন্ত যাবে না। গালি দেওয়ার জন্যই মাথা ঠিক ছিল না। '
ব্যবসায়ীর পরিবারের অভিযোগ, নারায়ণগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। পরে পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ জানান তাঁরা। যদিও থানার ওসি জানিয়েছেন, অভিযোগ জমা পড়েছে, সেই অনুযায়ী তদন্ত হচ্ছে। এদিকে, গোটা ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে চরম রাজনৈতিক টানাপোড়েন। তৃণমূলের এটাই সংস্কৃতি, কটাক্ষ করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সহ সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি আক্রমণ করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকেও। এদিকে, অভিযোগ প্রমাণ হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে দায় এড়িয়েছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।