অলোক সাঁতরা, পশ্চিম মেদিনীপুর: ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) আছড়ে না পড়লেও, নিম্নচাপের (Depression) ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন চাষের জমি। পশ্চিম মেদিনীপুর (West Midnapore) জেলায় ফসল বাঁচাতে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা (Farmers)। ধান ও আলু চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। আর এই নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফলানো ফসল। কিন্তু দফায় দফায় বৃষ্টির (Rain) হানায় এখন তা ধ্বংসের মুখে। জওয়াদের (Jawad) হাত ধরে আসা নিম্নচাপের বৃষ্টি থামতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। মেদিনীপুর (Midnapore) সদর ব্লকের পাথরায় জলমগ্ন খেত থেকে ধান তুলতে হচ্ছে ছেঁকে। চলছে মাঠ থেকে জল বের করার চেষ্টা।
পাথরার বাসিন্দা বাবলু কোটাল বলেন, “ধান, আলু সবই জলের তলায়। দ্রুত জমি থেকে জল বের করার চেষ্টা চালাচ্ছি। জল বেরিয়ে গেলে হয়তো কিছুটা রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।’’ যে সব জমিতে আলুর বীজ বোনা হয়েছিল, সেখানেও জমে রয়েছে জল। বর্ষার মরসুম থেকে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে পাঁচবার নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টি আঘাত হানল পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষিক্ষেত্রে। পাথরার আরেক বাসিন্দা লক্ষ্মী সোরেনের কথায়, “কী করব। দুর্যোগ হয়েছে। ছেঁকে ছেঁকে ধান তুলতে হচ্ছে। যেটুকু বাঁচবে ঘরে তুলতে পারব।’’
এখন আলুর বীজ বোনার সময়। রোদ উঠলেও স্যাঁতস্যাঁতে মাটির ভিতরে থাকা আলুর বীজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে অঘ্রাণে নতুন ধান ঘরে তোলার পর্ব এখনও শেষ হয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুর কৃষি দফতর সূত্রে খবর, চলতি মরসুমে জেলায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। ৭০ শতাংশের বেশি ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পেরেছেন। মাঠে পড়ে থাকা বাকি প্রায় ৩০ শতাংশ ধানকে নিয়ে ক্ষতির আশঙ্কায় ভুগছেন কৃষকরা।
এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এপ্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পুজোর সময় ২০০ কোটি টাকা নষ্ট করেছেন। কৃষকদের জন্য বরাদ্দ করতে পারতেন।’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর আলু চাষ সম্পর্কে কী জানেন? মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের পাশে আছেন। উনি এখন দল বদলে উল্টো কথা বলছেন। মিথ্যা কথা বলেন। এসব করে টিকে থাকতে পারবেন না।’’ খেটে খাওয়া কৃষকরা এসব বোঝেন না। তাঁরা এখন চাইছেন সুরাহা।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা, সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের